বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিটুমিন বনাম কংক্রিট বিতর্ক

সড়ক নির্মাণে চাই টেকসই প্রযুক্তি

প্রায় দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টিপাত দেশের সড়ক ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বৃষ্টিতে পিচের রাস্তার প্রায় শতভাগ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ দেশে পিচের রাস্তা ব্যয়বহুলই শুধু নয়, এর রক্ষণাবেক্ষণ যে ঝুঁকিপূর্ণ এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। এ প্রেক্ষাপটে রাস্তা নির্মাণে টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্বারোপ করে ১৬ মাস আগে কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে নির্দেশদানের পর ১৬ মাস কেটে গেলেও তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ বিশ্বের সেই সব দেশগুলোর একটি যেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। বৃষ্টি হলো বিটুমিনের প্রধান শত্রু। বিটুমিন কিংবা পিচের রাস্তা নির্মাণের পর দু-একদিন বৃষ্টি হলেই তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বিটুমিন প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিণতিতে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয়ই শুধু নিশ্চিত হচ্ছে। বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সড়ক-মহাসড়কগুলো যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। সেগুলো মানুষের মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠছে। বাড়ছে দুর্ঘটনা। অতি সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী সস্তার দোহাই না দিয়ে বিটুমিনের পরিবর্তে দীর্ঘ স্থায়ী কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মন্ত্রীর এই নির্দেশনা তাৎপর্যের দাবিদার। বিটুমিনের সড়ক নির্মাণ কংক্রিটের তুলনায় সাশ্রয়ী হলেও বছরে বছরে সড়ক মেরামতে যে ব্যয় হয় তা অপচয়ের নামান্তর। আবহাওয়াগত কারণেও বাংলাদেশে বিটুমিনের রাস্তার তুলনায় কংক্রিটের রাস্তা সাশ্রয়ী। কারণ বৃষ্টি হলেই বিটুমিনের রাস্তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে পক্ষান্তরে বৃষ্টি কংক্রিটের রাস্তা আরও পাকাপোক্ত করে। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি জনগণের ট্যাক্সে টাকার অপচয় রোধে দীর্ঘস্থায়ী এবং টেকসই সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নিতে হবে। দুনিয়ার সব উন্নত দেশ বিটুমিনের বদলে কংক্রিট প্রযুক্তিকে রাস্তা নির্মাণে প্রাধান্য দিচ্ছে। বাংলাদেশের বৈরী আবহাওয়ায় বিটুমিনের ব্যবহার যেহেতু যুক্তিসঙ্গত নয় সেহেতু কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণে এখনই উদ্যোগী হতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর