শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

হজের ফাজায়েল ও মাসায়েল

মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী

হজরত বুরাইদাহ (রা.) বর্ণনা করেন : রসুল (সা.) বলেন, হজের ভ্রমণে খচর করা এত বড় নেকির কাজ যেমন জিহাদ ফিসাবিলিল্লাহ্তে খরচ করা হয়ে থাকে। এক টাকা খরচ করলে সাতশ টাকার খরচ করার পুণ্য লাভ হয়। হজরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে; তিনি নবী করিম (সা.)-এর কাছে উমরাহ করতে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন। নবী করিম (সা.) তাকে উমরাহতে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এটাও বললেন : প্রিয় ভাই! আপনার বিশেষ দোয়ার মধ্যে আমাকেও শরিক করবেন এবং দোয়ার মধ্যে আমাকে ভুলবেন না।

আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন : যখন কোনো লোক পাক-পবিত্র মাল নিয়ে হজের নিমিত্ত বের হয়ে নিজ বাহনের পাদানিতে পা রেখে 'লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক' ধ্বনি দ্বারা তালবিয়া পড়তে থাকে, তখন আসমান থেকে এক আওয়াজদাতা ডেকে বলে : 'লাব্বায়কা ও ছাআ'দায়ক' তোমার জন্যই উপস্থিতি ও সৌভাগ্য! তোমার পাথেয় হালাল, তোমার বাহন হালাল এবং তোমার হজও কবুল ও মাবরুর। এর মধ্যে কোনো গুনাহ ও পঙ্কিলতা নেই। আর যখন হারাম মাল দ্বারা হজের জন্য ঘর থেকে বের হয় এবং বাহনের পাদানিতে পা রেখে 'লাব্বায়কা' বলে তখন আসমান থেকে এক আওয়াজদাতা ডেকে বলে : 'লাব্বায়কা ওয়ালা ছাআ'দায়ক' তোমার জন্যই উপস্থিতি ও কোনো কল্যাণ নেই। তোমার পাথেয় হারাম, খরচাদি ও মাল-সম্পদ হারাম, তোমার হজ পাপে পরিপূর্ণ যা কখনো কবুল হতে পারে না।

ফায়দা : কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, এক টাকা খরচ করলে এক লাখ টাকা খরচ করার সমান সওয়াব ও পূর্ণ লাভ হয়। সুতরাং অপব্যয় থেকে বেঁচে উদার মনে হজের ভ্রমণে খরচ করা উচিত। কিন্তু কিছু লোক আছে, যারা প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ খরচও এড়িয়ে যায়। অপরদিকে দেশে আনার জন্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খুব ক্রয় করে। অথচ হারামাইন শরীফাইনে অবস্থানের সময়ে খাবারে খরচ করায় এবং মীনা, আরাফাত ও মুযদালিফায় যাতায়াত করতে উদার মনে এক রিয়াল খরচ করার বিনিময়ে এক লাখ রিয়াল আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার মতো সওয়াব পাওয়া যায়। উভয়দিকেই লাভ। খুব খাওয়া-দাওয়া হলো আবার আখিরাতের পাল্লায়ও অগণিত নেকী জমা হলো।

হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল (সা.) বলেছেন : নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা বলেছেন : আমি যে বান্দাকে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা দান করেছি, অর্থ ও পুঁজিতে প্রশস্ততা দিয়েছি, অতঃপর এমনভাবে পাঁচটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল যে, সে ব্যক্তি এর মধ্যে একবারও আমার ঘরে হাজিরা দিল না, নিশ্চিতভাবে সেই ব্যক্তি আমার রহমত থেকে বঞ্চিত থাকবে।

ফায়দা : উপরোক্ত হাদিসটি হাদিসে কুদসি যা আল্লাহতায়ালা সরাসরি তার প্রিয় হাবীব (সা.)-কে জানিয়ে দিয়েছেন এবং নবীজীর ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। এমন প্রত্যেক অবস্থাপন্ন লোকের জন্য বড়ই সৌভাগ্যের বিষয় যারা প্রতিবছর হজ ও উমরার জন্য বায়তুল্লাহ গমন করেন। আর এটি হচ্ছে তার জন্য মজবুত দলিল যে, তিনি হজরত ইব্রাহীম (আ.)-এর ঘোষণায় এতবার 'লাব্বায়ক' বলেছিলেন যতবার তিনি কাবাঘরে হাজিরা দিচ্ছেন।

লেখক : মুহতামিম, জামিয়া মদীনাতুল উলূম, পূর্ব নূরের চালা, ভাটারা, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর