শনিবার, ১ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাল্টে গেল দেশের মানচিত্র

১১১টি ছিটমহল এখন বাংলাদেশের

গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের মানচিত্র। বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকার আওতাধীন এসেছে গতকাল মধ্যরাত থেকে। ভারতীয় এসব ছিটমহল বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা সীমান্ত চুক্তিবলে। একই সঙ্গে অপদখলীয় ২ হাজার ২৬৮ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৭ হাজার ১১০ একরবিশিষ্ট ৫১টি ছিটমহল গত মধ্যরাত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের সার্বভৌমত্বের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দুই দেশের ছিটমহলগুলো অমীমাংসিতভাবে ছিল ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর থেকে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু সরকার ছিটমহলের অধিবাসীদের অধিকারহীন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে এ সমস্যার মানবিক সমাধানের উদ্যোগ নেয়। ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশ ও ভারত তাদের ছিটমহলগুলো বিনিময় করবে। কিন্তু নানা জটিলতা ও হীন রাজনীতির দুর্বিপাকে এ চুক্তি বাস্তবায়নে ৪১ বছর বিলম্বিত হয়। ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহলের ৪৪ হাজার মানুষের নাগরিক সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত হবে। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে ছিটমহলের অধিবাসীরা এ মুহূর্তে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। নতুন এক জীবনের স্বপ্ন দেখছেন তারা। বাংলাদেশ ও ভারত সাবেক ছিটমহলের অধিবাসীদের ৬৮ বছর ধরে বিদ্যমান দুরবস্থার অবসানে ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছে। ছিটমহলগুলোতে রাস্তাঘাট, ক্লিনিক, স্কুল নির্মাণে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক পরিকল্পনা। ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে গত মধ্যরাত থেকে নতুন এক মানচিত্রের অধিকারী হলো বাংলাদেশ। ভূখণ্ডগতভাবে বাংলাদেশ লাভবান হলেও এটি নিছক ভূমি বিনিময় নয়। বরং এর ফলে দুই দেশের সাবেক ছিটমহলগুলোর ৬৮ হাজার মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো। দুই দেশ হীন রাজনীতি ও লাভ-লোকসানের হিসাব না করে মানবিকতাকে প্রাধান্য দেওয়ায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সীমান্ত-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পন্ন হওয়ায় সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও দুই দেশের মৈত্রীর বন্ধন জোরদারে তা অবদান রাখবে।

সর্বশেষ খবর