সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাহাড় ধসে মৃত্যু

প্রশাসনকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে

পাহাড় ধসে প্রাণহানি বর্ষা মৌসুমের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছরই বাড়ছে মৃত্যুর তালিকা। পাহাড়ের পাদদেশে যাদের বসত, তারাই পাহাড় ধসের শিকারে পরিণত হচ্ছে। গত শনিবার মধ্য রাতে বান্দরবানের লামায় শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এ 'প্রাকৃতিক' দুর্যোগে। রাঙামাটির কাউখালীতে আরেকজনের মৃত্যু ঘটেছে পাহাড় ধসে। পাহাড়ের পাদদেশে সাধারণত গরিব মানুষেরই বসবাস। ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থানে তারা বসত গড়েন অল্প খরচে থাকার জন্য। এসব গরিব মানুষের একাংশ প্রতিবছরই পাহাড় ধসের শিকার হয়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে। তারপরও দুর্ঘটনা এড়ানো অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায় জনসচেতনতার অভাবে। প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড়ে ধস সৃষ্টি হয় মাটি আলগা হয়ে যাওয়ার কারণে। কারণে-অকারণে পাহাড় কাটা, পাহাড়ের গাছপালা ধ্বংস এবং জুম চাষের ফলে টানা বর্ষণে ধস সৃষ্টি হয়। গরিব মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয় ধসের কারণে। বান্দরবানের লামা এবং রাঙামাটির কাউখালীতে স্থানীয় প্রশাসন কয়েক দিন ধরে মাইকিং করে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও অনেকে তাতে কর্ণপাত করেনি নিরাপদ কোনো আশ্রয় না থাকায়। শনিবার মধ্য রাতে বান্দরবানের লামায় যে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে তাতে একই পরিবারের মা ও ছেলেসহ ছয়জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকজন। পাহাড় ধস একটি সাংবার্ষিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। দুর্ঘটনা রোধে পাহাড়ের তলদেশে বা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসতি স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দরকার। শুধু বর্ষা মৌসুম এলেই লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া নয়, কেউ যাতে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসতি গড়তে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে তীক্ষ্ন নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি পাহাড় কাটা, পাহাড়ের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য যাতে নষ্ট না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। প্রশাসন এ ব্যাপারে তীক্ষ্ন নজর রাখলে পাহাড় ধসে গরিব মানুষের প্রাণহানির যে ঘটনা প্রতিবছর ঘটছে তা এড়ানো সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর