সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিদেশে নারী শ্রমিক প্রেরণ

নিশ্চিত হোক নিরাপদ কর্মপরিবেশ

বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রেকর্ড পরিমাণ নারী শ্রমিক ও কর্মী বিদেশে কাজ করতে গেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনশক্তি রপ্তানিতে যখন ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে তখন এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক ঘটনা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৩২৬ জন নারী শ্রমিক বিদেশে কাজ করতে গেছেন। আগামী কয়েক মাসে সৌদি আরবে আরও ৫০ হাজার নারী কর্মী পাঠানোর তাগিদ রয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ওমান, মরিশাস, কুয়েত, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিকরা কাজ করতে যাচ্ছেন। ব্যুরো অব ম্যান পাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে গত বছরে মোট ৭৬ হাজার ৭ জন নারী প্রবাসে কাজ করতে যান। এর আগে তিন বছরে যথাক্রমে ৫৬ হাজার ৪০০ জন, ৩৭ হাজার ৩০৪ জন ও ৩০ হাজার ৫৭৯ জন কাজ করতে দেশ ছাড়েন। এ বছরের জুন পর্যন্ত সময়ে সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী পাঠানো হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সাড়ে ১৫ হাজার নারী কর্মী সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক নারী কর্মী পাঠানো হয়েছে জর্ডানে ১১ হাজার ৫৯৬ জন। এর পাশাপাশি ওমানে ৯ হাজার ১৮৯ জন, লেবাননে ৬ হাজার ১৩৩ জন, কাতারে ৪ হাজার ৯৪৫ জন, সৌদি আরবে ৭৩৭ জন, বাহরাইনে ২১৭ জন এবং কুয়েতে ৩ জন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরার ভূমিকা পালন করছে। এ হিসেবে বিদেশে নারী শ্রমিক রপ্তানি বৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য যে সুখবর বলে বিবেচিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। তবে মধ্যপ্রাচ্যসহ যেসব দেশে নারী শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে সেসব দেশে তারা যাতে নিগৃহের সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ মিশনকে তীক্ষ্ন নজর রাখতে হবে। তারা যাতে শ্রমের ন্যায্যমূল্য পান সে বিষয়টিও এ সংক্রান্ত সব চুক্তিতে উল্লেখ থাকা দরকার। প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস সেইফ হোম খোলার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে এই সেইফ হোমগুলো যাতে প্রকৃত অর্থে প্রবাসী নারীদের স্বার্থ রক্ষার কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর