মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

সালাম : সম্প্রীতির সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম

মুফতি শরীফুল ইসলাম দা.বা.

ইসলামপূর্ব যুগে আরবরা পরস্পর সাক্ষাৎ হলে একে অপরকে হাইয়্যাকাল্লাহ বা আল্লাহ তোমাকে জীবিত রাখুন ইত্যাদি বলে সম্ভাষণে সালাম করত। ইসলাম এ পদ্ধতি পরিবর্তন করে আসসালামু আলাইকুম বলার রীতি প্রচলন করেছে অর্থাৎ তুমি সর্বপ্রকার কষ্ট ও বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাক। জগতের অন্য যে কোনো সভ্য জাতি পরস্পর সাক্ষাৎকালে তারা যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রকাশ বাক্য ব্যবহার করে থাকে তাদের সেসব বাক্যের তুলনায় ইসলামের সালামের বাক্য হাজারো গুণে উত্তম। কেননা তাদের সেসব বাক্যে কেবল প্রীতি লেন-দেন হয়। আর ইসলামের সালাম ও এর জবাবে প্রীতি বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর মাধ্যমে দোয়াও করা হয়। তাই তো কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে সালামকারী সালামের মাধ্যমে যেরূপ শব্দ ব্যবহার করেছে তারচেয়ে উত্তমরূপে জবাব দাও অথবা অনুরূপ শব্দই তাকে বলে দাও। সালামের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মহানবী রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন তোমরা ইমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে যেতে পারবে না। আর পরস্পরের মহব্বত না করা পর্যন্ত ইমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন কথা বলে দিব যা দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মহব্বত বৃদ্ধি পায়, তা হচ্ছে পরস্পর সালামের প্রসার ঘটানো। আর হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে ঘর থেকে আসার সময় কেউ যদি সালাম দিয়ে আসে তাহলে সে ঘর আল্লাহর হেফাজতে রেখে আসা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলেও সত্য যে, সালামের এত গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও আমরা আজ একে অপরকে সালাম দিতে ভুলে যাই এবং সালাম দিতে লজ্জা পাই। অনেকে অফিসে গেলে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সালাম দেয় কিন্তু বাসায় এলে পিতা-মাতাকে সালাম দেয় না, স্ত্রীকে সালাম দেয় না। ছোট ছেলে-মেয়েদের সালাম জিজ্ঞাসা করলে বলে লজ্জা লাগে। আবার দেখা যায় যে কিছু লোক আছে তারা মুখে সালাম না দিয়ে ইশারাতে সালাম দেয়। হ্যাঁ, কেউ যদি দূরে হয় তবে মুখে সালাম বলে ইশারার দ্বারা বুঝানো যায়। কেননা, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইহুদিদের সালাম হচ্ছে আঙ্গুল দ্বারা। খ্রিস্টানদের সালাম ইঙ্গিত দ্বারা আর মুসলমানদের সালাম হচ্ছে আসসালামু আলাইকুম দ্বারা। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সালামের গুরুত্ব বুঝে বেশি বেশি সালাম দেওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : খতিব, তিলনা চক জামে মসজিদ, নওগাঁ।

 

সর্বশেষ খবর