বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

শৃঙ্খলার লাগাম পরাতে হবে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিছুতেই শৃঙ্খলার লাগাম পরানো যাচ্ছে না। স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার শর্তে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সাময়িকভাবে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কথা রাখেনি। দেশের মোট ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ যাবৎ মাত্র ১৭টি ক্যাম্পাস স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য কয়েক দফা সময় নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার গরজ অনুভব করছে না 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়' নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নিয়মনীতি, প্রশাসনিক কাঠামো, পড়াশোনার মান কোনো কিছু মানা হচ্ছে না এমন অভিযোগও প্রবল। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেখভাল করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানটি কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। কারণ অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা নেই ইউজিসির। তারা শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশই করতে পারেন। দোষী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়েও তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস রয়েছে তারাও ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়া বাড়িতে শাখা ক্যাম্পাস বসিয়ে রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইউজিসি কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা করলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। ইউজিসিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চতর ডিগ্রির সার্টিফিকেট নিশ্চিত হলেও তারা প্রকৃত অর্থে কতটা উচ্চশিক্ষিত হচ্ছেন তা নিশ্চিত নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিতরণের কারখানায় পরিণত হয়েছে এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। এ যাচ্ছেতাই অবস্থা ঠেকাতে সরকার ব্যবস্থা নেবে এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর