মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট

নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

পরিবহন শ্রমিকদের কাছে গত রবিবার ছয় ঘণ্টা জিম্মি হয়ে পড়েছিল রাজধানীবাসী। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েকজন বাসচালক ও হেলপারকে জেল-জরিমানা করায় তারা রাজধানীর বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। যা ইচ্ছে তাই করা এবং নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে ভাবা যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে তাদের অশোভন প্রতিবাদ তারই প্রমাণ। পরিবহন মালিকদের সমিতি ও শ্রমিকদের তথাকথিত ট্রেড ইউনিয়নের দাপট এতটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে যে, তারা মানুষ হত্যা করেও প্রাপ্য শাস্তির ঊর্ধ্বে থাকতে চান। ট্রাফিক আইন ভাঙাকে তো তারা অপরাধই মনে করেন না। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করাকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা যে নিজেদের অধিকার বলে ভেবে থাকেন তা নানা অজুহাতে বেশি ভাড়া আদায়ের ঘটনায় স্পষ্ট হয়। রাজধানীতে সম্প্রতি বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে সিএনজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে। সরকারিভাবে কিলোমিটারপ্রতি ১০ পয়সা ভাড়া বৃদ্ধির অনুমতি দেওয়া হলেও পরিবহন শ্রমিকরা কখনো দেড় কখনো দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। তাদের দাবিকৃত ভাড়া দিতে আপত্তি জানালে জোর যার মুল্লুক তার তত্ত্বের এই উপাসকরা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করছেন। মোবাইল কোর্ট নামানো হয়েছিল পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বেআইনি ভাড়া আদায় থেকে যাত্রীদের রক্ষা করতে। আর তাতেই পরিবহন শ্রমিকরা বেছে নেন ধর্মঘটের পথ। আমাদের দেশে যাত্রী নিগৃহে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের যে অশুভ ঐক্যজোট গড়ে উঠেছে তা কোনো সভ্য দেশে কল্পনা করাও কঠিন। যথেচ্ছতার যে নিন্দনীয় প্রবণতা তাদের মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তা সামাল দেওয়া না হলে পরিবহন ক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলতেই থাকবে। আমরা আশা করব সরকার জনস্বার্থে এ নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।  নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অধিকার বলে বিবেচিত হবে এমন ঘৃণ্য মনোভাবের সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করা উচিত হবে না।

সর্বশেষ খবর