মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শিশু শিক্ষার হালচাল

ঝরে পড়ার প্রবণতা রুখতে হবে

দেশে স্কুলগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। শিশু শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হচ্ছে। তারপরও বাস্তবতা হলো প্রতি বছর প্রাথমিক স্তরে ২১ শতাংশের বেশি শিশু ঝরে পড়ছে। ‘সবার জন্য শিক্ষা জাতীয় পর্যালোচনা বাংলাদেশ ২০১৫’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ইউনেস্কো প্রণীত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এখনো ২৪ শতাংশ শিশু প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি শেষ করতে পারছে না। এর মধ্যে ২ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিই হয় না। যারা ভর্তি হয় তাদের মধ্যে ২১ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু প্রাথমিক স্তরেই ঝরে পড়ে। প্রতিবেদনে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার দ্রুত বিস্তারের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ১৮ লাখ শিশু প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তি হয়েছে, যা আগের তিন বছরের দ্বিগুণ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ৮৭ হাজার ১০৯টি স্কুলের মধ্যে ২০১৩ সালে ৬৭ শতাংশ স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালনা করেছে। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৩ সালে ভর্তির হার ১০ শতাংশ বেড়েছে। প্রাথমিক সমাপনী শেষ করা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৯ শতাংশে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যমতে, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ উচ্চশিক্ষায়ও শিক্ষার্থী ভর্তির হার বেড়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষকের সংখ্যা ৫৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। চাইল্ড এডুকেশন অ্যান্ড লিটারেসি সার্ভের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায় দুই লাখ শিশুর মধ্যে ২০১০ সালে ৫৯ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান ঘণ্টা বৃদ্ধি করতে ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১ লাখের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর ৭৯ শতাংশ স্কুলে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।  শিশু শিক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসার দাবিদার হলেও এতে যে আত্মপ্রসাদের অবকাশ নেই ২ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুর নিরক্ষর থাকার চিত্র তারই ইঙ্গিত দেয়। শিশুদের স্কুলমুখী করার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হলেও শতভাগ সাফল্য অর্জনে এ সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে হবে।  পাশাপাশি যে ২১ শতাংশ শিশু মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়ছে তাদের ধরে রাখার ক্ষেত্রেও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর