মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভ্রাতৃঘাতী হানাহানি থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

ইসলাম ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে জড়িত হওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন দুজন মুসলমান তরবারি (বা অন্য কোনো অস্ত্র) নিয়ে একে অপরের ওপর আক্রমণ করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত উভয় ব্যক্তিই দোজখী হবে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আরজ করা হয় হত্যাকারীর পরিণতি তো বোধগম্য; কিন্তু নিহত ব্যক্তির এ পরিণতি হবে কেন? মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- ‘কেননা সেও তার বিরোধী পক্ষকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’- আহমদ, বোখারি, মুসলিম। 

রসুল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা সাতটি সর্বনাশা গুনাহ থেকে বিরত থেকো। এ সাতটি গুনাহের ভিতর তিনি এটিও উল্লেখ করেছেন : আল্লাহ যাকে হত্যা করা অবৈধ ঘোষণা করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করা।’ -বোখারি, মুসলিম আবু দাউদ, নাসায়ী।

এক লোক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমীপে নিবেদন করল : আল্লাহর কাছে কোন্ পাপটি সবচেয়ে জঘন্য। তিনি বললেন, ‘কাউকে আল্লাহর সমান মনে করা, অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।’ লোকটি বলল, তারপর কোন্টি? তিনি উত্তর দিলেন- ‘তোমার জীবিকায় অংশীদার হবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে মেরে ফেলা।’ সে আবার আরজ করল : তার পরে কোন্টি? তিনি জওয়াব দিলেন : ‘পড়শীর স্ত্রীর সঙ্গে জিনায় লিপ্ত হওয়া।’ অনন্তর এর সমর্থনে আল্লাহ পাক ঘোষণা দিয়েছেন : ‘যারা আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদের ইবাদত করে না, আল্লাহর নিষিদ্ধকৃত হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না (তারাই প্রকৃত ইমানদার)। -সূরা আলফুরকান-৬৮। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অনুসারীদের সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমার পরে তোমরা পরস্পরের হত্যাকারী কাফেরদের অনুরূপ হয়ে যেও না।’ -বোখারি, মুসলিম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘হাশরের দিন সবকিছুর আগে মানুষ হত্যার বিচার হবে।’ -বোখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও ইবনে মাজা। নাসায়ী ও বায়হাকী বর্ণিত এক হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘কোনো মুমিনের হত্যাকাণ্ড আল্লাহর কাছে সারা দুনিয়া ধ্বংসের চেয়েও বেশি মারাÍক (আহমদ, বোখারি মুসলিম)।

আল্লাহ আমাদের হানাহানি থেকে বিরত থাকার ও সত্য পথে চলার তওফিক দান করুন। আমিন

লেখক : ইসলামী গবেষক

 

সর্বশেষ খবর