বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অহমিকাতে সর্বনাশ, বিএনপিকে থাকতে হবে অপেক্ষায়

নঈম নিজাম

অহমিকাতে সর্বনাশ, বিএনপিকে থাকতে হবে অপেক্ষায়

ভদ্রলোক বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। সময়টা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের সময়ের। একদিন আমার সঙ্গে তার দেখা হলো। তিনি বললেন, আমার একটা লেখা আছে পাঠাতে চাই। আমি বললাম, পাঠান। সমস্যা নেই। আমরা সব মত প্রকাশ করি। সিদ্ধান্ত নেবে পাঠক। তিনি কয়েকশ পাতার বিশাল একটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি পাঠালেন। আমি হতবাক! বই প্রকাশ করার জায়গা কোথায়?  কয়েক পাতা পড়লাম। তিনি মনের মাধুরী মিশিয়ে, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ সৃষ্টির মনগড়া ইতিহাস তৈরি করেছেন। মহাযন্ত্রণায় পড়লাম! কী করে এত বড় বই প্রকাশ করি এই ছোট কাগজে। যিনি পাণ্ডুলিপি আনলেন তাকে বললাম, এত বড় বই এই ছোট কাগজে আমরা প্রকাশ করতে পারব না। কোনো একটি প্রকাশনীতে পাণ্ডুলিপিটি পাঠানো উচিত। বই আকারে বের করতে পারেন।  তবে উনি কোনো নিবন্ধ, প্রবন্ধ, উপ-সম্পাদকীয় পাঠালে অবশ্যই প্রকাশ করব। বিএনপির অনেক নেতাই আমাদের এখানে লেখেন। তাদের লেখা উপ-সম্পাদকীয় আমাদের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। যেমন মীর নাছির উদিন, এহছানুল হক মিলনসহ অনেকেই রয়েছেন। দিনকালের সাবেক সম্পাদক কাজী সিরাজ নিয়মিত কলাম লেখেন। তার লেখা এর মাঝে প্রশংসিত। আমার এই বার্তা সংশ্লিষ্ট ভদ্রলোককে জানানো হলো কিনা জানি না। এর কিছু দিন পর বই সংশ্লিষ্ট কলাম লেখক কর্মকর্তা কাম নেতা ভদ্রলোক আমাকে ফোন করলেন। ধমকের সুরে জানতে চান, তার লেখা প্রকাশ হচ্ছে না কেন? আমি বিস্মিত হলাম। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে হাওয়া ভবনের কর্মচারীদের এমন স্বর ছিল। এটিএন বাংলাতে বার্তা সম্পাদক থাকাকালে অনেক মোকাবিলা করতে হয়েছিল। আমি তাকে বললাম, আপনি ফোন করার কথা আপনার দলের কোনো পত্রিকার সম্পাদককে। ভুল করে দলের মুখপত্রের সম্পাদককে ফোন না দিয়ে আমাকে করেছেন। তিনি আবার বললেন, আমি আপনাকেই ফোন করেছি। তার কণ্ঠে দাম্ভিকতা। আমি কথা বাড়ালাম না। ফোন লাইন কেটে দিলাম। এই ভদ্রলোকই প্রধানমন্ত্রীকে প্রবেশ করতে দেননি চেয়ারপারসনের অফিসে। গত কয়েক বছর বিএনপিতে তার ইশারা ছাড়া কিছুই হয় না। তিনি ভীষণ ক্ষমতাশালী বিএনপির রাজনীতিতে। সেই দাপটই হয়তো আমাকে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।

এই ফোনের পর বিএনপিকে নিয়ে আমার যা বোঝার বুঝে গেলাম। ক্ষমতার দাম্ভিকতায় পেয়ে বসেছে বিএনপিকে। দাপট আগেই দেখানো শুরু। ক্ষমতায় এলে কী হবে আল্লাহপাক জানেন। বিএনপির একজন নেতার সঙ্গে আমার এ নিয়ে কথা হয়। সেই নেতা বললেন, এই ভদ্রলোক ব্যস্ত ছিলেন তখন বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখার রাজনীতি নিয়ে। এ কারণে তিনি ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের সঙ্গে তখন খারাপ আচরণ করতেন। চেয়ারপারসনকে নেতা-কর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। নিজে আত্নীয়তা করেছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তার টার্গেট ছিল যাতে সবাই বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ, ব্যথিত, হতাশ হয়। বিএনপির প্রতি কারও যাতে সমবেদনাও না থাকে। শুধু সেই ভদ্রলোক নন, কিছু দিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসের কিছু কর্মকর্তার কাগজপত্র দেখলাম। তারা ব্যবসা করছেন। কোম্পানি খুলেছেন কয়েকটি। ব্যাংকের লেনদেনও খারাপ নয়। ব্যবসা করার অধিকার সবারই রয়েছে। কিন্তু চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা, তাদের ভাইরা এই বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে প্রশ্ন তৈরি হয়। কারণ সরকারের আনুকূল্য ছাড়া এখন বাণিজ্য সম্ভব নয়। তারা করছেন ব্যবসা। আর বিএনপি নেতা-কর্মীরা ডুবছেন মামলায়। সারা দেশে বিএনপি কঠিন দুঃসময় অতিক্রম করছে। রহস্যটা কী?

বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টার সঙ্গে একবার বাংলাভিশনে একটি টকশোতে গিয়েছিলাম। টকশোতে আমি বললাম, চেয়ারপারসনের একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল প্রণব মুখার্জির সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ না করা। খালেদা জিয়ার দিল্লি সফরকালে ভারত লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়েছিল। চার্টার্ড ফ্লাইট দিয়েছিল জয়পুর যেতে। রাষ্ট্রপতি ভবনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আলাদা করে ডিনারের আয়োজন করেছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে গিয়ে দেখা করেন বাংলাদেশের বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে। সব কিছু নজিরবিহীন। জবাবে ভারতীয় রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফরকালে বিএনপি চেয়ারপারসন হরতালের অজুহাতে দেখা করেননি। এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার নয়। ভদ্রলোক বললেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। ভারতকে উচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। আমি অবাক হলাম। বিস্মিত হলাম কথা শুনে। ভালো করে তাকালাম তার দিকে। এবার ভদ্রলোক যুক্তি দেখালেন, সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তখন দেখা হয়নি। এ কারণে একটা শিক্ষা দেওয়া হলো। এ কথা শুনে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছিলাম না। চুপ থাকলাম। এরপর ভদ্রলোককে একাই কথা বলতে দিলাম। আমি আর কথা বাড়ালাম না। শুধু তারা নন, আসলে ৫ জানুয়ারির আগে বিএনপি ছিল দাম্ভিক আর অন্ধ মানুষদের দল। তাদের ভারতসহ অনেক দেশকে তোয়াক্কা করার সময় ছিল না। আর এখন তাদের লবিস্ট নিয়োগ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির এক নেতা কংগ্রেসম্যানদের ভুল স্বাক্ষর দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। প্রতিবাদ করেছেন সংশ্লিষ্ট কংগ্রেসম্যানরা। ভারতে বিজেপি সভাপতি অমর সিং বানিয়ে অন্য একজনকে ফোনে মিলিয়ে দিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। কী দরকার ছিল? স্বাভাবিক একটা রাজনীতি বিএনপি করতে পারত। বিজেপি সভাপতির সঙ্গে বেগম জিয়ার দেখা করার কথা বলা কঠিন কিছু নয়। কিন্তু অস্বাভাবিক আচরণ কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দরকার ছিল। শেখ হাসিনার ফোনকলে সাড়া দেওয়া দরকার ছিল। মাঠে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন করলে বিএনপি ভালো করত। নির্বাচনের পরও বিএনপির বাড়াবাড়ি থামেনি। দরকার ছিল না কোকোর মৃত্যুর পর বাড়াবাড়ির, চিৎকার করে সংবাদ সম্মেলন, এক কর্মকর্তার আস্ফালনের। সবই ভুল ছিল। ভুল ছিল টানা তিন মাস ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার‌্যালয়ে থাকা। শ্রাবণ মাসের কাজ শ্রাবণে করতে হয়। ভাদ্র মাসেরটা ভাদ্র মাসে। এক মাসেরটা অন্য মাসে করলে চলে না। তিন মাসের অবরোধ বিএনপিকে কিছুই দেয়নি। নেতা-কর্মীদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। মামলায় জর্জরিত করেছে। সেই সময় দরকার ছিল সময় নিয়ে পরিকল্পিত রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন। দেশকে ধ্বংসস্তূপে বানানো নয়।

বর্তমান বাস্তবতায় বিএনপি কী করবে? সেদিন এক নেতা প্রশ্ন করলেন আমাকে। বললাম, বিএনপিকে ভুল থেকে বের হয়ে আসতে হবে। রাজনীতি করতে হবে আবেগ ঝেরে ফেলে। রাজনীতিতে ধৈর্য একটি বড় বিষয়। ৫ জানুয়ারি জয়ের সম্ভাবনাই ছিল বিএনপির। পরাজিত হলে আন্দোলনের একটি ইস্যু পেত। কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া রাজনীতি করার যৌক্তিকতা নেই। অবশ্য বিএনপির ভুল করাটা অতি পুরনো। মনে আছে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও চট্টগ্রামে অস্ত্র উদ্ধার কাহিনী। কোনো ব্যাখ্যা আজও আমি পাই না। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরের দিনের কথা। তৎকালীন এনএসআই কর্মকর্তা মেজর লিয়াকত আসেন এটিএন বাংলা অফিসে। সকাল বেলায় সরকার ফিরোজের টেলিফোন পেয়ে আমি অফিসে আসি। এসে দেখি সরকার ফিরোজের কক্ষে বসে আছেন মেজর লিয়াকত। তিনি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ধারণ করা সব ভিডিও ফুটেজ চান। আমি তার কাছে জানতে চাই তিনি লিখিতভাবে কোনো কাগজ এনেছেন কিনা। তিনি বললেন, না আনিনি। কিন্তু আপনাকে এখনই ফুটেজ দিতে হবে। মনে হচ্ছিল তিনি সামরিক শাসকের মতো নির্দেশ দিচ্ছেন। আমি বললাম, লিখিত লাগবে। তিনি ক্ষুব্ধ হলেন। আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন। মেজর লিয়াকত বেরিয়ে যেতে আমি মার্কিন দূতাবাসের তথ্য বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জন চেবরা ও আলী আহসান আহমেদ আলীকে জানাই। তারা সঙ্গে সঙ্গে এটিএন অফিসে আসেন। লিখিত কাগজ নিয়ে আসেন। তারাও এই ফুটেজ চান। একই সময় ফোনে আমার কথা হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। অসুস্থ অবস্থায় তিনি আমার ফোন ধরেছিলেন। তার প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ ও আওয়ামী লীগ নেতা অসীম কুমার উকিল আসেন ডকুমেন্ট চেয়ে একই ধরনের চিঠি নিয়ে। আমার প্রশ্ন সেদিন কী কারণে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা একুশে আগস্টের ভিজুয়াল ডকুমেন্ট নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল? আজও সেই প্রশ্নের জবাব পুরোপুরি মেলেনি। চট্টগ্রামে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কেলেঙ্কারির সময়ও ছিলেন এই মেজর লিয়াকত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে অস্ত্র খালাসের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মামলায় লিয়াকত ও তার ডিজি এখন কারান্তরীণ।

বিএনপির অনেক বন্ধুর সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয়। তারা মাঝে মাঝে আমার কাছে আসেন। সুখ-দুঃখ শেয়ার করেন। তাদের আমি উপরের গল্পগুলো বলি। এই তো সেদিন একজন বললেন, বিরোধীদলীয় নেত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র আমাদের সময়ে হয়েছিল। আমরা দায় এড়াতে পারি না। যদি সত্যিই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থেকে থাকে তাহলে এই জীবনে আর রাজনীতি না করাই ভালো। সেই নেতা হয়তো কথার কথা বলেছেন। কিন্তু অনেক কিছু মানতে পারেননি বলেই সাবেক কূটনীতিক শমসের মবিন চৌধুরী রাজনীতি ছেড়েছেন। এই বাস্তবতা থেকে বিএনপিকে শিক্ষা নিতে হবে। শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে অভ্যন্তরে। আর এই অভিযান শুরু করতে হবে চেয়ারপারসনের কার‌্যালয় থেকে। বের করে দিতে হবে বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখা চক্রকে। যারা সরকারের এই মেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, নতুন নতুন শিল্প করছেন তাদের অর্থের উৎস খুঁজতে হবে। অন্যথায় বিএনপিকে একটা গোলকধাঁধায় থাকতে হবে।

বিএনপিকে নিয়ে একটি পুরনো গল্প মনে পড়ছে। সময়টা ’৯১ সালের নির্বাচনকালীন। নাঙ্গলকোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন জয়নাল আবেদীন ভূইয়া। বিএনপির ডা. কামরুজ্জামান। নাঙ্গলকোটের মানুষ আমাকে পছন্দ করত, এখনো করে। আমরা জয়নাল আবেদীন ভূইয়াকে নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছি। একদিন স্থানীয় একটি বাজারে জয়নাল আবেদীনকে নিয়ে বসে আছি। আমাদের সঙ্গে কয়েকশ মানুষ, আছে দলের নেতাকর্মী-সমর্থকরা। জমজমাট। আমাদের পাশ ঘেঁষে যাচ্ছিলেন ডা. কামরুজ্জামান। নির্বাচনী প্রচারণায় তার সঙ্গে শুধু তার ভাতিজা। তিনি আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গেলেন। আমরা হাসাহাসি করলাম তাকে নিয়ে। তিনি কত কম ভোট পাবেন তা নিয়ে বিতর্কও করলাম এক দফা। ফলাফল ঘোষণার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম পেশাগত কারণে। তখন কাজ করতাম আজকের কাগজে। নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদক। ঢাকায় বসে ফলাফল শুনি। জয়নাল আবেদীন হেরেছেন মাত্র সাড়ে ২২শ ভোটে। হতবাক হয়ে গেলাম ডা. কামরুজ্জামানের জয়ে। আশা করিনি তিনি জয়লাভ করবেন। নির্বাচনে জয়লাভ জনগণের বিষয়। জনগণ কখন কী সিদ্ধান্ত নেবেন কেউ জানেন না। ’৭০ সালে মওলানা ভাসানী নির্বাচনে গেলেন না। ভোটের বাক্সে অনেকে লাথি মেরেছিলেন। তারা বলেছিলেন, সামরিক শাসকরা ভোট নিরপেক্ষ করবেন না। মুসলিম লীগ আবার আসবে। বঙ্গবন্ধু নৌকা নিয়ে নামলেন।  বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে রায় দিলেন। এ রায়েই বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করলেন। জনগণ জাগলে কোনো কিছুতেই কাজ হয় না।  এদেশের মানুষ কখন কোন অবস্থান নেবে কেউ জানে না। বিএনপি গত নির্বাচনে জনগণের প্রতি আস্থা রাখতে পারেনি। এই না পারাটাই ছিল তাদের ভুল। এখন অপেক্ষায় থাকতে হবে।

  লেখক : সম্পাদক বাংলাদেশ প্রতিদিন।

 

 

 

সর্বশেষ খবর