সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ত্যাগের সাধনায় জনমাল্যে ভূষিত সু চি

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

ত্যাগের সাধনায় জনমাল্যে ভূষিত সু চি

অং সান সু চি এখন আর মাত্র একটি নাম নয়, ইতিহাস। যে ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় লেখা শুধু ত্যাগ আর ত্যাগ। ত্যাগই মানুষকে মহান করে। এ কথার যথার্থতা এবং উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন অং সান সু চি, ভূতপূর্ব বার্মা, বর্তমান মিয়ানমারের অবিসংবাদিত নেতা। তার ত্যাগের দৃষ্টান্ত এখন স্বদেশের গণ্ডি পেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক নেতাদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।  বাবা, মা, ভাই এবং স্বামীকে অকালে হারানোর দীর্ঘশ্বাস চেপে রেখে, সব ট্র্যাজেডি নিজ বুকের পাটাতনে ধারণ করে, সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে বিলাতে থাকা দুই সন্তানের ভালোবাসার ডাককে উপেক্ষা করে নির্জন গৃহে অনিশ্চিত দীর্ঘমেয়াদি স্বেচ্ছা নির্বাসন ভোগকারী নেত্রী সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের নির্বাচনে জনমাল্যে ভূষিত হয়েছেন। মিয়ানমারের ছয় কোটি মানুষের নয়নের অশ্র“তে সিক্ত হয়ে বলেছেন, আমি তোমাদেরই লোক। ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের নির্বাচনের ফল ওইদিন সন্ধ্যায় সবেমাত্র রাজধানীতে আসতে শুরু করেছে, তাতেই নেপিডোর রাজপথে জনতার বিজয় ধ্বনি ও আকাশের দিকে ছিটানো পুষ্পের পল­বে এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি হয়ে যায়। যার চিত্র বিবিসির রিপোর্টার তুলে ধরেছেন এভাবে ‘নেপিডোর রাস্তায় লাখো মানুষের ঢল, চোখে-মুখে উল্লাসের আভা, মুক্তির আনন্দ যাত্রায় সবার মুখে একটিই কথা আন্টি সু চিকে একবার দেখতে চাই’।

রাজনীতি কঠিন, মানুষের ভালোবাসা অর্জন আরও কঠিন। আর দেশপ্রেমের সনদ পাওয়া, সে তো সীতার অগ্নিপরীক্ষার চেয়েও মহাকঠিন। সব কঠিনকে পেছনে ফেলে এসেছেন তিনি। কীভাবে সম্ভব হলো। এই কঠিন যাত্রার শুরুর কথা বলেছেন সু চির স্বামী মাইকেল এরিস। নিজের লেখা বই ‘একজন স্বামী, একজন প্রেমিক, একজন ড. মাইকেল এরিসের জবানবন্দি’ গন্থে এরিস নিজে বলেছেন, ‘৩১ মার্চ ১৯৮৮ সাল। অন্যদিনের মতোই অক্সফোর্ডের এক সাধারণ সন্ধ্যা। আমরা একটু পড়াশোনা করছি, দুই ছেলে ঘুমে। এমন সময় বেজে উঠল ফোন। ফোন রেখে সু চি জানাল মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ, ভয়ানক স্ট্রোক করেছে। কিছু বলার আগে সে স্যুটকেস গোছাতে শুরু করল। আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে উঠল, এরপর আর কিছুই আমাদের জীবনে আগের মতো থাকবে না। চিরজীবনের অশনি সংকেত মনে হলো। সু চি চলে গেল দুই দিন পর রেঙ্গুনে, হাজার হাজার মাইল দূরে, তার মায়ের পাশে’।

অং সান সু চির লেখা, ‘ফ্রিডম ফ্রম ফিয়ার অ্যান্ড আদারস’ গ্রন্থের ভূমিকা লিখতে গিয়ে এরিস আবার লিখেছেন, ‘সব সময় সু চি বলত, দেশের মানুষ যদি ডাকে তাহলে আমি তাদের নিরাশ করতে পারব না। সু চির অবর্তমানে আমি পুরনো সেই ১৮৭টি চিঠি বারবার খুলি আর পড়ি। বিয়ের আগের আট মাসে এসব চিঠি সু চি আমাকে লিখেছিল। একদিন তাকে সত্যি সত্যি বার্মায় ফিরতে হবে, এ কথা সে বারবার আমাকে মনে করিয়ে দিত।’ একবার সু চি লিখল, ‘বার্মা আমাকে ডাকছে, আমার বাবা আমাকে ডাকছে, আমাকে চলে যেতে হবে। সে সময়ে আমার পাশে থেক তুমি, আমার অধিকার বলে নয়, আমাকে ভালোবেসে’। ১৯৮৮ সালের ৩১ মার্চ মায়ের গুরুতর অসুস্থতার খবর পাওয়ার দুই দিনের মাথায় ইয়াংগুনে মায়ের শয্যাপাশে এসে বসলেন সু চি। মায়ের বুকে মাথা রেখে অঝরে কাঁদলেন। মা-মেয়ের মিলনের শেষ দৃশ্য। তারপরই শুরু হয়ে গেল একটার পর একটা কঠিন পরীক্ষা। কিছু দিনের মধ্যে মমতাময়ী মা চিরবিদায় নিলেন।

বাবা অং সান আততায়ীর হাতে নিহত হন বার্মা স্বাধীন হওয়ার কয়েক মাস আগে। অং সান ছিলেন বার্মার মুক্তি সংগ্রামের স্থপতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি। বার্মা স্বাধীন হয় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি। বাবার মৃত্যুর সময় সু চির বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। তারপর মা মাখিন চা-এর আদরে বেড়ে ওঠা। বড় হতে হতে মায়ের কাছে বাবার বীরত্ব ও দেশপ্রেমের কথা শুনতে শুনতে অজান্তে একদিন বাবাই হয়ে ওঠে সু চির জীবনের আলোকবর্তিকা ও নায়ক। লেখাপড়া শিখেছেন প্রথমে ভারতে এবং পরে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর সু চির মা বার্মার রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভারতে দায়িত্ব পালন করেছেন। মাও ছিলেন উদার ও প্রসারিত দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ। সুতরাং সু চির মানসকাঠামো গঠিত হয় মায়ের ভালোবাসা ও বাবার রক্তের সংমিশ্রণে। তাই সেদিন মায়ের মৃত্যু বেদনার অশ্র“ মুছে সু চি ইয়াংগুনের খোলা আকাশের দিকে তাকালেন। সমবেদনা জানাতে আসা হাজারো মানুষের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করলেন। এই সময়ে ঘটে গেল আরেক হৃদয়বিদারক ঘটনা।

অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৮ সালের মাঝামাঝিতে ইয়াংগুনে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। সামরিক জান্তা সরকার হত্যা করে প্রায় তিন হাজার নিরীহ মানুষকে। মানুষ ছুটে আসে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা অং সানের কন্যা সু চির কাছে। সু চির সামনে উপস্থিত হয় কঠিন মানসিক দ্বন্দ্ব। লন্ডনে স্বামী-সন্তানের ভালোবাসা, প্রাণের টান, অন্যদিকে বার্মার অসহায় মানুষ। সু চি দিব্যনেত্রে দেখতে পারছেন একদিকে গেলে আরেক দিক হারাতে হবে। এ কী মহাকঠিন পরীক্ষা। সু চি অজান্তে বার্মার মাটিতে শুয়ে থাকা বাবার ডাক শুনতে পেলেন। মানুষকে তিনি ফিরাতে পারলেন না। মায়ের মৃত্যু শোককে পেছনে ফেলে মানুষের মিছিলে যোগ দিলেন। গঠিত হলো এনএলডি (ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি) নামের রাজনৈতিক দল। সু চি হলেন দলের অন্যতম প্রধান। শুরু হলো সংগ্রাম। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। কিন্তু জান্তা সরকার নির্বাচনের ফল বাতিল করে সু চিকে গৃহবন্দী করলেন। তারপর একনাগাড়ে ১৫ বছর বন্দী। ২০১০ সালে মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলেন। বন্দী জীবনের সঙ্গী ছিলেন শুধু দু’তিনজন গৃহপরিচারিকা।

১৯৯৫ সালে এরিস লন্ডন থেকে এলেন, একটিবারের জন্য হলেও সু চির সঙ্গে যদি দেখা করা যায়। কিন্তু ইয়াংগুন এয়ারপোর্টে সামরিক সরকারের লোকজন এরিসকে আটকে রাখে ২০ দিন। এই ২০ দিন এরিস বাকি দুনিয়ার কাছে নিখোঁজ ছিলেন। তারপর শর্তসাপেক্ষে সু চির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয় এরিসকে। এ সময়ে দুই ছেলেও লন্ডন থেকে এসে মা-বাবার সঙ্গে যোগ দেয়। সে সাক্ষাতের দৃশ্য এরিস বর্ণনা করেছেন তার লেখায় এভাবে, ‘সু চির সঙ্গে যখন আমার দেখা হলো তখন সে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে। সু চির দাবি, তার দলের যেসব কর্মীকে তার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের ভিন্ন জায়গায় আলাদা করে রাখা যাবে না। সু চির ভয় ছিল, ওদের আলাদা রাখা হলে অমানুষিক অত্যাচার করা হবে। টানা ১২ দিন সে পানি ছাড়া আর কিছু গ্রহণ করেনি। ১২ দিনের মাথায় কর্তৃপক্ষ তার দাবি মেনে নিল। কর্মীদের ওপর অত্যাচার করা হবে না। অনশনের সময় সু চি বই পড়েছে, কথা বলছে। পুরো সময়টিতেই সে শান্ত ছিল’। এরপর এরিস দুই ছেলেকে নিয়ে অক্সফোর্ডে ফিরে যান। সু চি বন্দী হয়ে পড়ে থাকেন ইয়াংগুনের নির্জন গৃহে। ওটাই ছিল সু চির সঙ্গে এরিসের শেষ দেখা। তারপর শুধুু বিনা তারের স্পর্শে ভালোবাসার অনুভূতি, মনের টান। ১৯৯৯ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে এরিস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে শেষ দেখাটুকুও হলো না। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত স্বামীর পাশে দু’দণ্ড বসার সময় পেলেন না।

কঠিন ব্রতের আপসহীন সু চি, লাখো মানুষের আন্টি সু চিকে বিশ্বের মানুষ চিনে। কিন্তু প্রেমিক সু চি অথবা স্ত্রী সু চিকে কেউ চেনে না। সু চি নিজেই সেটিকে পাথরচাপা দিয়েছেন। ১৯৭২ সালে বিয়ের অব্যবহিত আগের ৮ মাসে ১৮৭টি প্রেমের চিঠি লিখেছিলেন সু চি এরিসের কাছে। এই অফুরন্ত ভালোবাসাকে তিনি কবর দিয়েছেন মিয়ানমারের মানুষের মুক্তির জন্য। এরিসের মৃত্যুর খবরে সামরিক জান্তা সরকার বলেছিল, মৃত স্বামীর মুখ দেখার জন্য তিনি যেতে পারেন। কিন্তু শর্ত হলো, আর কখনো মিয়ানমারে ফিরতে পারবেন না। সেই শর্ত সেদিন সু চি প্রত্যাখ্যান করেছেন। একদিকে মিয়ানমারের ছয় কোটি নির্যাতিত-নিপীড়িত দুঃখী মানুষের মুখের চাহনি, অন্যদিকে শেষবারের জন্য স্বামীর মুখ দেখা। দুটি দৃশ্য একই সময়ে ভেসে উঠেছে তার চোখের সামনে। আবারও সেই মহাকঠিন এসিড টেস্ট। সেদিনও সু চি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাবার সংগ্রামী চেতনার স্পর্শ তাকে বারবার জাগ্রত রেখেছে। গেলেন না স্বামীর শেষ যাত্রায়, এ জনমে প্রিয় এরিসের সঙ্গে আর কোনো দিন দেখা হবে না। ১৫ বছর সু চি চার দেয়ালের ভিতরে আটকা থাকলেও তার চেতনা পৌঁছে গেছে মিয়ানমারের প্রতিটি ঘরে ঘরে। চেতনার শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি। চাপাতি, অস্ত্র, কামান, তলোয়ার, চেতনার কাছে চিরকাল পরাজিত হয়েছে, এ কথা জানতেন সু চি।

সোনা আগুনে যত বেশি পুড়ে তত বেশি উজ্জ্বল ও পরিশুদ্ধ হবে, তেমনি একের পর এক আঘাতে সু চি আরও বেশি করে পরিশুদ্ধ করেছেন নিজেকে। বন্দী অবস্থায় তিনি প্রচুর লেখাপড়া করেছেন, বই লিখেছেন। আহরিত জ্ঞানের আলোকে নিজের প্রজ্ঞার গভীরতা বাড়ানোর ব্রতে নিয়োজিত থেকেছেন নির্মল চিত্তে। তিনি নিজে এবং অন্য সহলেখকদের নিয়ে মোট ১১টি বই লিখেছেন। ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারসহ ১৭টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। সমৃদ্ধ প্রজ্ঞায় সু চি উপলব্ধি করেছেন, মানুষের কল্যাণের প্রকৃত রাজনীতিতে শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। হৃদয় দিয়ে বুঝেছেন, নীতিহীন, আদর্শহীন, ষড়যন্ত্র, হিংসা এবং বিদেশি প্রভুনির্ভর রাজনীতি মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না। সীমাহীন নির্যাতন ও বঞ্চনার পরও ধীরস্থির থেকেছেন, নিজেকে শান্ত রেখেছেন, কখনো উত্তেজিত হননি। হিংসার পথ বেছে নেননি। জ্বালাও-পোড়াও, গুপ্তহত্যার পথকে শুধু পরিহার নয়, ঘৃণা করেছেন। মানুষ তার দিকে তাকিয়েছে সৌম্য শান্তির প্রতীক হিসেবে।  স্নিগ্ধ মায়াবী আকর্ষণে অজপাড়াগাঁয়ের নেংটিপরা মানুষ আন্টি সু চির হাত ছুঁয়ে প্রাণভরে আশীর্বাদ করেছেন।

পশ্চিমা শিক্ষা সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা এবং অভিজাত পরিবারের মেয়ে হয়েও অং সান সু চি মনে রেখেছেন শিকড়ের কথা। চাটুকারদের স্যার-ম্যাডাম ডাকার সংস্কৃতি চালু করতে দেননি। রাজনীতির ঘেরাটোপে শত উসকানি উপেক্ষা করেছেন। সর্বদা লক্ষ্যে অটুট  থেকেছেন। মনে রেখেছেন End is Greater Than Means. তার চূড়ান্ত লক্ষ্য মিয়ানমারের মানুষের মুক্তি, যেনতেনভাবে ক্ষমতায় আরোহণ নয়। তাই তিনি এমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেননি, যা তার চূড়ান্ত লক্ষ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিনি নিজে কখনো ক্ষমতার সিঁড়ি খোঁজার চেষ্টা করেননি। সময় মতো জনগণই তার সামনে ক্ষমতার সিঁড়ি নিয়ে আসবে, এটাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। প্রতিটি ঘাত-প্রতিঘাত ও সংকটে প্রমাণ করেছেন তিনি জনগণের নেত্রী, বিদেশি প্রভুর দরকার নেই। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেননি। বরং উল্টা বিদেশিরা এসে তার কাছে ধরনা দিয়েছে। কারণ বিদেশি শক্তিধররা বুঝেছেন দেশের মানুষ সু চির সঙ্গে আছে। মহাত্বগান্ধী, মার্টিন লুথার কিং এবং নেলসন ম্যান্ডেলাকে তিনি আদর্শ হিসেবে মেনেছেন। সু চি নিজে যত ত্যাগ করেছেন, মিয়ানমারের মানুষ তাকে ততই গ্রহণ করেছেন, পূজনীয়  মেনেছেন। ত্যাগের দৃষ্টান্তে হয়েছেন অনন্য। সুতরাং ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে মিয়ানমারের মানুষ সু চিকে প্রাণভরে ভোটমাল্য পরিয়েছেন। তবে এখনো সবকিছু সংশয়পূর্ণ। যেতে হবে বহুদূর। ২০০৮ সালে জান্তা সরকার কর্তৃক প্রণিত সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে আছে সেনাবাহিনীর হাতে। সু চি নিজে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের পদ, প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। তবে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সু চি ধীরে চল নীতিতে ধাপে ধাপে এগোবেন বলে মনে হয়। ২৫ বছরের ত্যাগ ও সাধনায় যেখানে এসেছেন তার থেকে আবার ছিটকে পড়তে চাইবেন না।  নিশ্চয়ই ১৯৯০ সালের কথা মনে রাখবেন।  বিশ্বদরবারে তিনি দ্বিতীয়বার প্রমাণ করলেন, তিনিই মিয়ানমারের জনগণের বৈধ প্রতিনিধি। সংগ্রামী নেতা অং সানের রক্ত তার ধমনীতে। মিয়ানমারের মানুষের ওপর তিনি ভরসা রাখবেন।

লেখক : কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর