মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কথাবার্তায় সংযমী হতে হবে

মাওলানা আবদুল খালেক

কথাবার্তায় সংযমী হওয়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। এ ক্ষেত্রে সংযম হওয়ার মধ্যেই রয়েছে অশেষ কল্যাণ। মানুষের বাকশক্তির অপব্যবহার পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়জীবনে অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে। বিপর্যয়ের কারণ ঘটাতে পারে জিহ্বার অবিবেচনাপ্রসূত ব্যবহার।

সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি আমাকে তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের (সঠিক ব্যবহারের) নিশ্চয়তা দিতে পারবে, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিতে পারব (বোখারি থেকে মিশকাতে)।

উপরোক্ত হাদিসে জিহ্বা এবং লজ্জাস্থানের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। জান্নাতে যেতে হলে কথাবার্তায় যেমন সংযমী হতে হবে, তেমনি লজ্জাস্থানের অননুমোদিত ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। মুসলমানদের অবশ্যই সত্যনিষ্ঠ হতে হবে, মিথ্যাকে বর্জন করতে হবে। কানকথা শোনা কিংবা সত্যতা যাচাই না করেই শোনা-কথা প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট নয়, সে যা শুনে তাই (সত্যতা যাচাই না করে) বলে বেড়ায় (মুসলিম থেকে মিশকাতে)।

গুজব সমাজে অশান্তি ও বিভক্তি সৃষ্টি করে। সামাজিক শৃঙ্খলার জন্যও তা বিপজ্জনক। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুজব সৃষ্টির ব্যাপারে তাঁর অনুসারীদের সতর্ক করেছেন। নিচের হাদিসটি তারই প্রমাণ। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে- শয়তান মানুষের রূপ ধরে তাদের কাছে আসে এবং তাদের মিথ্যা কথা (গুজব) শোনায়। অতঃপর লোকজন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাদের কেউ বলে, আমি এমন এক ব্যক্তিকে এ কথা বলতে শুনেছি যার চেহারা চিনি, কিন্তু নাম জানি না (মুসলিম থেকে মিশকাতে)। এ হাদিস থেকে জানা যায়, গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান দেওয়া উভয়ই শয়তানি কাজ। উপরোক্ত হাদিসগুলোর নিরিখে জিহ্বার ব্যবহার অর্থাৎ কথাবার্তা বলার সময় সচেতন থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সামান্য অসতর্কতা দুনিয়া ও আখেরাতের দিক থেকে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর