বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইহকাল পরকাল ও গৃহদাহের নায়িকার পরকীয়া

নঈম নিজাম

ইহকাল পরকাল ও গৃহদাহের নায়িকার পরকীয়া

সান্ধ্যকালীন এক আড্ডায় কথা হচ্ছিল টকশো নিয়ে। আলোচকরা এক হাত নিচ্ছেন টকশোওয়ালাদের। মূল কথা টকশোতে যারা যান তারা কিছুই বোঝেন না। কিছুই জানেন না। ফালতু কথাবার্তা বলেন। একজন বলে বসলেন, সামান্য কিছু টাকার জন্য যান। কথাবার্তায় আওয়ামী লীগ সমর্থক এক ব্যবসায়ীর উৎসাহটা একটু বেশি। তিনি আমাকে দেখে বললেন, ভাই আপনি কিছু মনে করবেন না।  আমরা একটু টকশোওয়ালাদের নিয়ে কথা বলছি। আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম, কিছু মনে করছি না। আমার মূল কাজ পত্রিকা বের করা। আপনারা চালিয়ে যান। তাকে বললাম না টকশোতে যারা যান তারাও বিভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেউই কম যান না। সব পেশার লোকই যান। শুধু নিরীহ সাংবাদিককে আক্রমণ করে কী হবে। এর মাঝে বিএনপি সমর্থকের মুখে কথা বের হচ্ছে না। কোনোভাবে তিনি বললেন, আসলে হয়েছে কি এখন ৯৫ ভাগ লোকই টকশোতে সরকারকে সমর্থন করে বক্তব্য রাখছে। নুরুল কবীরদের আজকাল দেখি না। আসিফ নজরুল, তুহিন মালিক, গোলাম মাওলা রনিদের খবর নেই। মান্না জেলে। আরেকজন বললেন, অনেক টকশোতে কিছু বিত্তশালী পরিবারের সন্তান অথবা রাজনৈতিক কর্মীকে দেখি। তারা জ্ঞানী বক্তৃতা দেন। তাদের পরিচয় দেওয়া হয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে। অবশ্যই আওয়ামী লীগ, বিএনপির কর্মী হিসেবে তারা যেতে পারেন। কথা বলতে পারেন ব্যবসায়ী হিসেবে। তারা কথা বলছেন, আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির কর্মীর মতো। পরিচয় দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। করেন বিজ্ঞাপনের ব্যবসা। পরিচয় দেন সাংবাদিক। সমস্যাটা এখানেই। আমি শুনে যাচ্ছি। মন্তব্য করছি না। মাঝে মাঝে শ্রোতা হতে ভালো লাগে। এবার আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ী আবার মুখ খুললেন, বললেন, দেশটাতে দরকার একনায়ক সরকার। একতরফা মতামতের ভিত্তিতে সব চলবে। ভিন্নমত পোষণের এত দরকার নেই। কীসের গণতন্ত্র? আমরা উন্নয়ন চাই। বাংলাদেশে সর্বকালের রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হচ্ছে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো দেশ চাইলে এত ভোটাভুটির কী আছে? দেখলাম এখানে তর্ক-বিতর্কে জড়ানোর কোনো মানে নেই। তার চেয়ে শুনে যাওয়া ভালো। আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ী ভদ্রলোক কথা বলেই চলছেন। আমি চলে এলাম বিদায় না নিয়ে। চলুক বিতর্ক।

হঠাৎ মনে হলো আজকাল দেশে সরকার সমর্থকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এই সমর্থকদের এক কথা কোনো সমালোচনা চলবে না। সমালোচনা হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর উন্নয়নের বারোটা বাজবে। তাই মিডিয়ার দায়িত্ববোধ নিয়েও কথা উঠছে। মিডিয়ার দায়বদ্ধতা অবশ্যই আছে। একটি সীমারেখার মধ্যেই মিডিয়াকে চলতে হয়। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে ৯৯ ভাগ মিডিয়ার ভূমিকা আপসহীন। আমরা বিশ্বাস করি কতগুলো জায়গাতে আপস চলে না। মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, আমাদের অখণ্ডতার প্রশ্নে ভিন্নমতের সুযোগ নেই। ক্রান্তিলগ্নে একটি জাতিকে জাগিয়ে তুলতে মিডিয়া সব সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের গণআদালতের পাশে মিডিয়াই ছিল। আবার শাহবাগের গণজাগরণেও মিডিয়ার সোচ্চার ভূমিকা ছিল। এমনকি অনেক রিপোর্টার পেশাদারিত্বকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারা মঞ্চের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে টিভিতে লাইভ রিপোর্ট করেছেন। এই বাস্তবতা কারও চোখে পড়ে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা দুনিয়ার কোনো মিডিয়াই তার অস্তিত্বের বাইরে যায় না। ইরাক কিংবা আফগান যুদ্ধে পশ্চিমা মিডিয়ার অবস্থান আমরা দেখেছি। তাই অকারণে মিডিয়াকে দোষারোপ করে লাভ নেই। শুধু মিডিয়া নয়, প্রত্যেক নাগরিকের নিজস্ব দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব কে কতটা পালন করছে? আমরা খুব সহজে কোনো কিছুতে খুশি থাকতে পারি না। শরৎচন্দ্রের গৃহদাহ উপন্যাসের কথা মনে পড়ছে। এ উপন্যাসের অচলা স্বামী হিসেবে মহিমকে পেয়েও খুশি নয়, সে পরপুরুষে আসক্ত। অচলা উচ্চশিক্ষিত নারী। তার স্বামী মহিমও কম যান না। মহিম একদিকে বিত্তশালী, অন্যদিকে উচ্চশিক্ষিত ও আধুনিক মনের ছেলে। তারপরও অচলা সুখী নন গ্রাম্য নারী মৃনালের মতো। মৃনালের সঙ্গে স্বামীর বয়সের দূরত্ব অনেক। সংসারে অভাব-অনটন লেগে আছে। তারপরও স্বামী-সংসার নিয়ে মৃনাল মহাসুখে। অন্যদিকে উপচেপড়া সুখে থেকেও হৃদয়ের আকুলতার কাছে হার মানে অচলা। পরপুরুষ সুরেশের অপ্রতিরোধ্য আহ্বান তাকে জাগিয়ে দেয়। স্বামীর নিষ্ঠা তুচ্ছ হয়ে যায় নিষিদ্ধ ভালোবাসার কাছে। জগৎসংসার সব সময় অসুখী থাকে। কারও মনেই শুধু স্বাচ্ছন্দ্যবোধে শান্তি থাকে না। উন্নয়ন আমাদের দরকার আছে। এতে মানুষের মনে স্থায়ী শান্তি আসবে না। মনের স্বস্তিও দরকার। 

রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীরপত্রের নায়িকা মৃণালিনীর কথা মনে পড়ছে। কিশোরী বিন্দুকে মৃণালিনীর অমতে তার আশ্রয় থেকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। বিন্দু আত্মহননের পথ বেছে নেয়। সংসারে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা বুঝতে পেরে হতাশ, ক্ষুব্ধ হয় মৃণালিনী। কারণ অসহায় কিশোরীকে সে রক্ষা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই বোধ থেকে মৃণালিনী ঘুরে দাঁড়ায়। প্রতিবাদী অবস্থান নেয়। মিডিয়া মাঝে মাঝে মৃণালিনীর কাজটুকু করে। একজন এমপি টিআর, কাবিখা বেচে জুয়া খেলবেন মিডিয়া কি সেই খবর প্রকাশ করবে না? সরকারের ঝামেলা করা মন্ত্রী-এমপির সংখ্যা বাড়ছে। গডফাদার, দখলবাজের সংখ্যা বাড়ছে। একজন উপমন্ত্রী যা খুশি তা করছেন। তিনি খেলার মাঠে পিস্তল নিয়ে প্রবেশ করেন। মধ্যরাতে নিজে লালমাটিয়া গিয়ে অস্ত্রসহ আসামি পাকড়াও করেন। যে কাজ পুলিশের করার কথা সেই কাজ তিনি করেন। সচিবালয়ে ভাঙচুর করেন। তারপরও তাকে বিদায় করা হয় না। এতে তিনি উৎসাহ পান। নতুন করে পিটুনি দেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে। দল তাকে সামান্য তিরস্কার করে। মিডিয়া কি এই খবর চেপে যাবে? তাহলে মিডিয়ার কাজ কী? আর এসব বিষয় নিয়ে সমালোচনা করলে কেউ যদি প্রচার চালায়, সরকারের বিরুদ্ধে এমন সমালোচনার অর্থ যুদ্ধাপরাধের বিচারের পথ বন্ধ করা, তখন মিডিয়া কর্মীদের ভেঙে পড়তে হয়। সরকারের কেউ কেউ জেনেশুনে বিষপান করলে অথবা করার চেষ্টা করলে তা অবশ্যই তুলে ধরতে হবে। কারণ বিষপানে মৃত্যু হতে পারে। তাই আগে থেকে সাবধান করা জরুরি। দাপুটে মানুষদের জানাতে হবে, দুনিয়াটা অতি অল্প সময়ের জন্য। হানাহানি সংঘাতে লিপ্ত হয়ে লাভ নেই। একজীবনে একজন ক্ষমতাবান মানুষের কতটুকু চাওয়ার থাকে? অবশ্য এ নিয়ে কবিগুরুর একটি লাইন মনে পড়ছে। তাহলো- ‘এ জগতে হায় সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি... রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি।’ আসলে কবি ঠিকই বলেছেন। এখন এসব নিয়ে কথা বললে, ‘রাজা যত বলে পারিষদ দলে বলে তার শতগুণ।’ আমাদের এই সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে।

আমাকে সেদিন এক বন্ধু বললেন, অনেক প্রভাবশালী বিত্তশালী ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার পর বদলে যান কেন? তাদের কি কোনো ভয়ডর নেই। কেউ কি আগামীর কথা চিন্তা করেন না? ইহকাল-পরকাল কোনোটার কথাই কি ভাবেন না? আমি বললাম, পৃথিবীটা অদ্ভুত। রহস্যময়। আমাদের চারপাশের রহস্য ভেদ করার জন্য অনেক বিজ্ঞানীই চেষ্টা করেছিলেন। কেউ কেউ এখনো করছেন। কিন্তু পারেননি। বরং বিখ্যাত অনেক মানুষের নিজের জীবনও ছিল জটিল ও রহস্যঘেরা। নেপোলিয়ন ভয় পেতেন বিড়াল দেখলে। দুনিয়াব্যাপী লড়াই করা এই যোদ্ধার সামনে বিড়াল পড়লেই তিনি ভীত হয়ে যেতেন। এ সময় ভয়ে তার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যেত। এমনকি দূর থেকে বিড়াল দেখলেও নেপোলিয়ন সতর্ক হয়ে উঠতেন। তার দেহরক্ষীরা বিষয়টি জানতেন। তারা বিড়াল নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকতেন। জগৎসংসারে এমন আরও অনেক ঘটনা লুকিয়ে আছে। পাখি কেনার শখ ছিল বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির। তিনি পয়সা খরচ করে পাখি কিনতেন। আর সেগুলোকে না পুষে ছেড়ে দিতেন। আর রবীন্দ্রনাথ কিনতেন বিভিন্ন ধরনের কলম। কিন্তু এই কলমগুলো দিয়ে রবীন্দ্রনাথ কখনোই লিখতেন না। হিটলার একজন ভালো বেহালাবাদক ছিলেন। জার্মানিতে এই যন্ত্রটিকে বলা হয় ভায়োলিন। খুনোখুনি কিংবা বিশাল কোনো হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ভায়োলিনে সুরের মূর্ছনা তুলতেন। এই সুরে থাকত তীব্র শোক। এই শোকের সুরে হিটলারের চারপাশ থাকত থমথমে। এই পরিবেশে তার অনেক সহকর্মীও সামনে যেতেন না। কারণ হিটলারকে তখন অন্যরকম দেখাত। এক সময় মাদাম কুরি প্রায়ই আত্মহত্যার চেষ্টা করতেন। কিন্তু কখনোই সফল হননি। আমাদের অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তিও অনেক কিছু করেন। যা তাদের কাছে অপরাধ বলে মনে হয় না।

চট্টগ্রামের সেরা ধনাঢ্য ব্যবসায়ী সেই বন্ধুর সঙ্গে গুলশানের এক আড্ডায় আবার দেখা হলো। আমাকে দেখলেই তিনি মজার মজার জোকস শোনান। এর আগে তিনি শুনিয়েছিলেন হাসিখুশির রসাত্মক জোকসটি। যা পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছিলাম। তবে তার এবারের কাহিনী অন্যরকম। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের টাকা মারা নিয়ে গল্পটি। কীভাবে ব্যাংকের অর্থ নিয়ে আর ফেরত দেওয়া হয় না সেই প্রসঙ্গে। আমি এই গল্প একজনকে শোনালাম। তিনি আর ব্যাংকের টাকা মারার মধ্যে তা রাখলেন না। নিয়ে গেলেন নিরীহ জনগণ এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের প্রাসঙ্গিকতায়। মূল কাহিনীটি চোর ও কৃষকের। এক কৃষকের এক জোড়া গরু ছিল। হঠাৎ গ্রামে বেড়ে যায় চোরের উপদ্রব। আর তাছাড়া চাষাবাদের অবস্থাও ভালো ছিল না। এর মধ্যে ধারদেনা বাড়তে থাকে। অবস্থা বুঝে কৃষক সিদ্ধান্ত নেন গরু বেচে দেবেন। রাতে ঘুমানোর সময় কথা বলেন কৃষাণীর সঙ্গে। কৃষাণীও একমত হন। কারণ এর মধ্যে কিছু ধারদেনাও বেড়ে গেছে। কৃষক ও কৃষাণী সিদ্ধান্ত নেন, গরু বিক্রির কিছু টাকা দিয়ে দেনা শোধ করবেন। বাকি টাকা দিয়ে পুকুরে মাছ চাষ হবে। সবজি লাগানো হবে ঘরের পাশের ক্ষেতে। কিছু হাতে রাখবেন দুঃসময়ের জন্য। কৃষকের বাড়িতে এ সময় চুরি করতে আসে দুই চোর। তারা গরু নেওয়ার জন্যই এসেছিল। কিন্তু কৃষক ও তার স্ত্রীর কথা তাদের কানে যায়। চোররা সিদ্ধান্ত নেয় গরু চুরি করবে না। কারণ গরু চুরি করে হাটে বিক্রিতে ঝামেলা। ধরা পড়লে গণপিটুনি। তার চেয়ে কৃষক হাটে নিয়ে গরু বিক্রি করুক। তারপর বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় তাকে চাকু ঠেকিয়ে টাকাগুলো নিয়ে নিলেই হয়। কৃষক যথারীতি হাটে গরু উঠাল। কিন্তু দাম মেলাতে পারল না। গরু বিক্রি না করেই বাড়ির পথ ধরল। রাস্তায় অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে চোরের দল। অন্ধকারে তারা দেখল গরু বিক্রি না করেই ফিরছে কৃষক। ক্ষিপ্ত হলো তারা। কৃষককে ধরল। জানতে চাইল গরু বিক্রি করেনি কেন? জবাবে কৃষক বলল দামে মেলেনি। মেজাজ আরও খারাপ হলো চোরদের। তারা বলল, ব্যাটা দাম কম হলে তোর সমস্যা কি? কম বেশির হিসাব আমরা বুঝতাম। তোর কাজ ছিল গরু বিক্রি।  আর এই কাজটা না করেই তুই ফিরলি। ক্ষতি তো তোর হয়নি। হলো আমাদের।

পুনশ্চ : দেশের অবস্থা নিয়ে আরেকটা গল্প মনে পড়ছে। গোপাল ভাঁড়ের গল্প আমরা সবাই কম-বেশি জানি। গোপাল একবার দোতলা বাড়ি বানাল। আর এই বাড়ি নিয়ে তার মধ্যে একটা অহঙ্কারও জন্ম নেয়। তার চিন্তা পাড়াপড়শিরা এসে বলুক গোপাল তুমি একটা দারুণ বাড়ি করেছ। কিন্তু ব্যস্ত পাড়াপড়শিদের সেদিকে তাকানোর সময় নেই। এ নিয়ে গোপালের মন খারাপ। এক দিন গোপাল বাড়ির দোতলার ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। এ সময় দেখতে পায় প্রতিবেশী এক ভাইপো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। গোপাল তাকে চিৎকার করে ডাকল, এই রাখাল, এই রাখাল কী করছিস ওখানে? রাখাল বুঝল কাকা তাকে ডাকার কারণ দোতলা বাড়ি দেখানো। তাই সে কোনো কথা বলল না।  চলে গেল। এ ঘটনার অনেক দিন পর রাখাল নিজের চেষ্টায় আরেকটি দোতলা বাড়ি বানাল। তারপর ডাকতে থাকল, কাকা কাকা সে বছর আমায় ডেকেছিল কেন? নিছক একটি গল্প হলেও আমাদের দুটি দলের লুকোচুরি এ গল্পটিকে মনে করিয়ে দেয়। রাজনীতি এক জটিল অঙ্ক। এ অঙ্কে কখন কে কাকে বাড়ি দেখাবে কেউ জানে না।

 লেখক : সম্পাদক বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর