রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশনের অগ্নিপরীক্ষা

নিরপেক্ষতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পৌর নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অরাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের অবসানও ঘটতে যাচ্ছে এ নির্বাচনের মাধ্যমে। স্বভাবতই আসন্ন নির্বাচন দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য যেমন অগ্নিপরীক্ষা তেমন নির্বাচন কমিশনের জন্যও। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের জনপ্রিয়তা আঁচ করা যাবে নির্বাচনের মাধ্যমে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রমাণের অগ্নিপরীক্ষা বলেও বিবেচিত হবে আসন্ন নির্বাচন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এ পর্যন্ত যেসব নির্দলীয় স্থানীয় নির্বাচন হয়েছে তাতে তারা কতটা নিরপেক্ষ ছিলেন সেটি প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। দলীয়ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল বিশেষত বিরোধী দল চাইবে নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেন তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও কার্যত তারা কতটা স্বাধীন তা পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। আসন্ন পৌর নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কর্তব্য পালনে তারা কতটা পারঙ্গমতার পরিচয় দেবেন তা দিয়ে তাদের নিরপেক্ষতা যাচাই করা হবে। নির্বাচনে ভোটারদের সুষ্ঠুভাবে রায় প্রদানের সুযোগ সৃষ্টিও নির্বাচন কমিশনের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। সন্দেহ নেই, নির্বাচন কমিশনও চায় নিজেদের সব ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে। কিন্তু এ দেশের কোনো দলীয় সরকার নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়েছে কিনা তা বরাবরই একটি প্রশ্ন। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হলেও তাদের স্বাধীনতা সরকারের সদিচ্ছার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।  পৌর নির্বাচনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হলে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতার মানদণ্ডে যেমন উত্তীর্ণ হতে হবে তেমন সরকারকেও উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে হবে। হারজিতকে বড় চোখে না দেখে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি সব পক্ষ প্রাধান্য দেবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর