সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

শান্তির ধর্ম ইসলাম দলাদলি ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এক মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের সুসম্পর্ক সামাজিক শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করে। এ সুসম্পর্ক পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় ঐক্যেরও নিশ্চয়তা বিধান করে। পাশাপাশি সুসম্পর্কের ব্যত্যয় হলে তা অশান্তি ও অকল্যাণের সূচনা করে। পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে। ইসলামী বিধানমতে মুমিন-মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে দলাদলি, মতবিরোধ, বিশৃঙ্খলা জন্ম দেওয়া গুরুতর কবিরা গুনাহ। যা রসুল (সা.)-এর হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এখন আর শয়তান এই বাসনা রাখে না যে, আরব উপদ্বীপের মুসলমানরা তাকে আর উপাসনা করবে। কিন্তু সে এখনো বাসনা রাখে যে, তাদের মধ্যে সে দলাদলি, মতবিরোধ ও বিশৃঙ্খলার জন্ম দেবে। অতএব, যে লোক দুজন মানুষ অথবা দু’দল লোকের মধ্যে বিবাদ-বিসম্বাদ বাধিয়ে দেয়, তাদের মাঝে কারও জন্য পীড়াদায়ক এবং উত্তেজনাকর কথা ও সংবাদাদির লেনদেন করে, সে শয়তানের সমগোত্রীয়, চোগলখোর এবং মানুষের ভিতর সবচেয়ে জঘন্য প্রকৃতির লোক। মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে জানাব না, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য খারাপ লোক কারা?’ সাহাবা (রা.)-গণ বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে তারাই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা দুষ্ট লোক, যারা চোগলখোরী করে আপনজনদের মাঝে বিরোধ-বিসম্বাদ বাধিয়ে দেয় এবং ভালো লোকের বিরোধিতা করে।’ বোখারী ও মুসলিম শরিফে আছে, রসুল (সা.) বলেন, ‘চোগলখোর বেহেশতে যাবে না।’ চোগলখোর হচ্ছে সে যে মানুষের মাঝে বা দুই ব্যক্তির মাঝে এমন কথা চালাচালি করে, যাতে কেউ মনোকষ্ট পায়, অথবা কারও ব্যাপারে তার বা তার কোনো বন্ধুর মনে ভয়ের উদ্রেক করে। সে বলে- তোমার ব্যাপারে অমুক এই এই বলেছে বা করেছে। তবে এতে যদি সমাজের জন্য কোনো কল্যাণ থাকে, তাহলে তাতে দোষ নেই। যেমন- সমূহ বিপদ বা অনিষ্ট থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে কাউকে সতর্ক করা। স্বামী-স্ত্রী, মনিব কর্মচারী এবং শ্রমিক-মালিকের সম্পর্কে অবনতি সৃষ্টিকারীও এর মধ্যে শামিল। আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত। এক হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অভিশপ্ত সে ব্যক্তি, যে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে এবং মনিবের বিরুদ্ধে কর্মচারীকে উত্তেজিত করে তোলে।’  আল্লাহ আমাদের সব ধরনের দলাদলি ও অপরের বিরুদ্ধে কুমন্ত্রণা দেওয়ার অপরাধ থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন।

লেখক : খতিব, আল আমিন জামে মসজিদ, খুলনা।

সর্বশেষ খবর