সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফরমালিন পরীক্ষার হালহকিকত

আদালতের নির্দেশনা পালনে দীর্ঘসূত্রতা কাম্য নয়

রাজধানীবাসীর স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নকল ভেজালের বিরুদ্ধে যে জেহাদ ঘোষণা করেছিল তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ডিএমপির এ জেহাদে দেড় বছর আগে নগরবাসী আশান্বিত হয়ে উঠলেও আজ তারা হতাশ। কারণ নকল ভেজাল বন্ধের উদ্যোগ না থাকায় অসৎ ব্যবসায়ীরা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছেন। স্মর্তব্য, দেড় বছর আগে ডিএমপি ঢাকার প্রবেশপথসহ বিভিন্ন বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান চালায়। তাদের এ অভিযানে সফলতাও আসে। বেশ কয়েকটি বাজারে ফরমালিন চেকিং বুথও স্থাপন করা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে এ অভিযান বেশি দূর এগোতে পারেনি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ছিল, ভেজালমুক্ত মেশিন নিজেই ভেজাল। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানা করাকে এক ধরনের চাঁদাবাজি বলে অভিহিত করেছিলেন তারা। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরিণতিতে ডিএমপির ভেজালবিরোধী অভিযানের অকাল মৃত্যু ঘটে। গত বছরের জুনে নজরদারির পাশাপাশি ফল ও শাক-সবজিতে ফরমালিন পরীক্ষার জন্য নগরীর ২৩৬টি কাঁচাবাজারে বিশেষ বুথ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল ডিএমপি। এ উদ্যোগের সঙ্গে ঢাকা সিটি করপোরেশন ও ব্যবসায়ী নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করে সহায়তার আশ্বাসও দেন। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই শান্তিনগর কাঁচাবাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে ফরমালিন চেকিং বুথ স্থাপন করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পর্যায়ক্রমে ফরমালিন চেকিং বুথ স্থাপন করা হলেও তা এখন অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। ভেজাল রোধে সরকার দৃশ্যত কঠোর হলেও কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় কোথায় কীভাবে ফরমালিন ব্যবহার হচ্ছে তা মনিটরিং করা যাচ্ছে না। দেড় বছর আগে ডিএমপির ফরমালিন চেকিং যন্ত্রের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যবসায়ীরা আদালতের আশ্রয় নেন। আদালত এ উদ্দেশ্যে সঠিক যন্ত্র তৈরি এবং তা নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের কয়েকটি সংস্থাকে দেন। ওই সংস্থাগুলো সঠিক যন্ত্র নির্ধারণ করার কোনো তথ্য এ পর্যন্ত ডিএমপিকে না দেওয়ায় খাদ্যে ফরমালিন মেশানো বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।  ভেজালমুক্ত খাবার খাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। এ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে গড়িমসির কারণে। যার দ্রুত অবসানই কাম্য হওয়া উচিত।

 

সর্বশেষ খবর