পৌর নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণবিধি ভঙ্গ মেনে নেওয়া হবে না এমনই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। নির্বাচন কমিশনের এ হুঁশিয়ারি যে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য— তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিরুদ্ধে কমিশন আদৌ কোনো যুত্সই ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা সে সন্দেহ শুরু থেকেই উঁকি দিচ্ছে। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এযাবত্ যে সব নির্বাচন হয়েছে তাতে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের মচ্ছব চললেও তারা কারণ দর্শাও নোটিস দিয়েই দায় সেরেছেন। জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনে গত চার বছরে হাজার হাজার ব্যক্তিকে শোকজ করলেও কারোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে প্রার্থীরা বুঝে ফেলেছেন নির্বাচন কমিশনের দৌড় শোকজ পর্যন্ত। এ উপলব্ধির কারণে নির্বাচনী মাঠে ব্যাপকভাবে আচরণবিধির লঙ্ঘন হচ্ছে। নির্বাচনী আইনে বিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে এযাবত্ কৃপণতাই দেখিয়েছেন। দেশে নির্বাচনী আইন ভঙ্গের যে অপসংস্কৃতি থাবা বিস্তার করছে তার লাগাম টেনে ধরতে আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগে যত্নবান হতেই হবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে শুধু শোকজে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। কেউ যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের সাহস না দেখায় তেমন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন বিধি ভঙ্গ পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা নির্বাচন প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদেরই বেপরোয়া করে তুলছে না, নির্বাচনী কর্মকর্তাদেরও বিপথে চলতে মদদ জোগাচ্ছে। নির্বাচন বিধিতে প্রাক-নির্বাচনী প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই এবং তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রাক-নির্বাচনী প্রচারণা ঠেকাতে ম্যাজিস্ট্রেট রাখার বিধান থাকলেও এবারের পৌর নির্বাচনে তা মানা হয়নি। আমরা আশা করব, নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কেউ যাতে যথেচ্ছতায় মেতে না ওঠে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সচেতন থাকবে। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে তাদের অবশ্যই শক্ত হতে হবে।