সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভালুকার এমপির লাগাম টানুন

ক্ষমতাদর্পীদের জন্য ক্ষুণ্ন হচ্ছে সরকারের ভাবমূর্তি

ময়মনসিংহের শিল্পাঞ্চল খ্যাত ভালুকার সংসদ সদস্য ডা. এম আমানউল্লাহ নিজেকে কী ভাবতে শুরু করেছেন তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে তার যে ভাবমূর্তি থাকা উচিত তা নির্দয়ভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বেপরোয়া আচরণ এবং পারিবারিক শাসনের কারণে। নিজেকে তিনি সংবিধান, প্রচলিত আইন-কানুন সব কিছুর ঊর্ধ্বে ভাবার অবিমৃষ্যকারিতাও ইতিমধ্যে প্রদর্শন করেছেন। এমপিপ্রবরের হঠকারী কর্মকাণ্ডে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এমনকি যে দলের কৃপায় তিনি এক সময় প্রজাতন্ত্রের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখনো সংসদ সদস্য পদে আছেন সেই আওয়ামী লীগও। গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত হয় ‘নৌকার বিপক্ষে আওয়ামী লীগ এমপি’— শীর্ষক এক বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন ক্ষমতাদর্পী ওই নেতা। ক্যাডারদের দিয়ে ভালুকায় বাংলাদেশ প্রতিদিন বিক্রির ওপর অলিখিতভাবে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেন তিনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত হয় ‘ভালুকায় এমপি আমানউল্লাহ পরিবারের শাসনে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিদিন’। ওইদিনই সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে তার ভাতিজা যুবলীগ নেতা রওনক শিহাব রব্বানি খাজা ওরফে খাজাবাবা সংবাদপত্র এজেন্টদের হুমকি দেন ভালুকায় কেউ বাংলাদেশ প্রতিদিন বিক্রি করলে তার দোকানে তালা দেওয়া হবে। দেশের সংবিধানে সংবাদপত্রকে চতুর্থ স্তম্ভের মর‌্যাদা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এ কথা ঘোষিত হয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকেও। ভালুকায় বাংলাদেশ প্রতিদিন বিপণনে এমপি ক্যাডারদের নিষেধাজ্ঞা এ স্বাধীনতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকারের ভাবমূর্তির জন্যও তা কলঙ্ক লেপনের শামিল। আমরা আশা করব, ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাদর্পী এই সংসদ সদস্যের বেপরোয়া আচরণে লাগাম পরানোর উদ্যোগ নেবে। এমপির ভাতিজা ও তার ক্যাডার বাহিনীর দখলদারি ও ক্ষমতার অপচর্চার বিষয়টিও তদন্ত করা হবে। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে বিসংবাদ সৃষ্টিকারী দুর্বিনীত নেতা-কর্মীদের সামাল দেওয়ার জন্যও নেওয়া হবে পদক্ষেপ, যা তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর