মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিল্পমন্ত্রীর আলটিমেটাম

ট্যানারি স্থানান্তরে তাগিদ সৃষ্টি করুক

রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি কারখানা সাভারের বিসিক চামড়াশিল্প নগরীতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য শিল্পমন্ত্রী ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন। কারখানা স্থানান্তরে চামড়াশিল্প মালিকদের সময় ক্ষেপণের কারণে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। রবিবার চলতি অর্থবছরে শিল্প খাতের উন্নয়নে সরকারের কার্যক্রম মূল্যায়ন সম্পর্কিত সভায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, কারখানা সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ট্যানারি মালিকের নামে চামড়াশিল্প নগরীতে বরাদ্দ দেওয়া প্লট বাতিল করা হবে। হাজারীবাগ থেকে সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল আজ থেকে তিন দশক আগে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০০৩-২০১৬ সালের জুন মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ১ হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পে চামড়াশিল্প স্থানান্তরে শিল্পমালিকদের ২৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার ও ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণে ৬৩৮ কোটি টাকা এবং অন্যান্য উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয় ১৮৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ এবং ৬৬২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা সরকারি খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ১৬৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে ঋণ হিসেবে। গত বছর ৩০ জুনের মধ্যে সব ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছিল শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত বছরের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে শিল্পমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ট্যানারি মালিকদের আলটিমেটামও দেওয়া হয়। কিন্তু এ আলটিমেটামে কোনো কাজ হয়নি। ট্যানারি মালিকদের যুক্তি, সাভারের চামড়াশিল্প নগরীর বর্জ্য শোধনাগার কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। শিল্প স্থানান্তরের সঙ্গে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। হাজারীবাগের চমড়াশিল্প রাজধানীর  জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। ট্যানারি স্থানান্তরে মালিকপক্ষের সময় ক্ষেপণ জনউদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করব শিল্পমন্ত্রীর আলটিমেটাম ঠেকাতে খোঁড়া যুক্তির আশ্রয় গ্রহণ নয়, কীভাবে ট্যানারি স্থানান্তর দ্রুত সম্পন্ন করা যায় সেদিকেই নজর দেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর