বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

চার সিটির বায়ুদূষণ

অস্তিত্বের স্বার্থেই এ বিপদ রুখতে হবে

বায়ুদূষণ রোধে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বায়ুদূষণ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত সোমবার এ আদেশ দিয়েছেন। চার সিটিতে বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ১৭ জানুয়ারি ওই রিট আবেদন করেন। রিটে বলা হয়, সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে অনিয়ন্ত্রিতভাবে রাস্তা ঝাড়ু দেন। এতে বিপুল পরিমাণ ধুলা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও রাস্তার পাশে জড়ো করে রাখা ধুলাবালু ও আবর্জনা যানবাহনের মাধ্যমে বাতাসে ছড়ায়। এসব ধুলা ও আবর্জনা পোড়ানোর ক্ষতিকর ধোঁয়ায় নগরবাসী শ্বাসকষ্টসহ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শুনানি শেষে আদালত চার সিটি এলাকার বায়ু থেকে ধুলা, ধোঁয়া ও প্রাণঘাতী উপাদান অপসারণে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। বৃহত্তর ঢাকার চার সিটি করপোরেশন এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্টে যে রিট আবেদন এবং এ প্রেক্ষাপটে আদালতের পদক্ষেপ বিশেষ তাত্পর্যের দাবিদার। বায়ুদূষণের কারণে উল্লিখিত চার সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যতম অনিরাপদ নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। গত ৯ বছরে ঢাকার বাতাসে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড বেড়েছে ৭৯ শতাংশ। বেড়েছে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও। রাজধানীতে নাইট্রোজেন অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে নাইট্রোজেন অক্সাইড শরীরে গেলে যেমন নানা ধরনের রোগব্যাধি তৈরি হয় তেমন শরীরে অক্সিজেন প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করলেও তা রোধের উদ্যোগ কার্যত নেই বললেই চলে। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙলে তা হবে চার সিটিবাসীর জন্য এক বিরাট অর্জন।  বায়ুদূষণ চার সিটির দুই কোটি মানুষের অস্তিত্বের জন্য সংকট সৃষ্টি করছে। অস্তিত্বের স্বার্থেই এ বিপদ ঠেকাতে সরকার, সিটি করপোরেশন শুধু নয়, নাগরিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর