বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাগরকেন্দ্রিক মহাপরিকল্পনা

সমৃদ্ধির চাবিকাঠি হয়ে দেখা দিক

বাংলাদেশের সাগরপ্রান্ত হতে পারে দেশের সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। যে চাবিকাঠি আয়ত্তে আনতে কাজও শুরু হয়েছে। ব্লু ইকোনমির দ্বার উন্মোচনে নেওয়া হচ্ছে মহাপরিকল্পনা। ইতিমধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বন্ধুদেশ জাপান বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক উন্নয়নের একটি মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে সরকারকে বিশদ তথ্য দিয়েছে। ২৫ বছর মেয়াদি এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বা ৭ লাখ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হবে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি বা জাইকা গত মাসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তাদের মহাপরিকল্পনা সম্পর্কিত একটি সার্ভে রিপোর্ট জমা দেয়। এ রিপোর্টটি জাইকা প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাইকা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ছাড়াও বিদ্যুত্ ও জ্বালানি, শিল্প ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও চীনকে নিয়ে যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট বা বিগ বি ইনিশিয়েটিভ গড়ে তোলার প্রয়াস রয়েছে তার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে মাতারবাড়ীকে বেছে নেওয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনায়। ওই এলাকায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে জাপানের অর্থায়নে। এ মহাপরিকল্পনার ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম এ বিদ্যুত্ প্রকল্পটি। এর পাশাপাশি মাতারবাড়ীতে একটি মাল্টিপারপাস সমুদ্রবন্দর নির্মাণেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যেখানে থাকবে বিদ্যুেকন্দ্রের কয়লা নামানোর জন্য জেটি ও হারবার। গড়ে তোলা হবে এনার্জি হাব, যার মধ্যে থাকবে কয়লা, এলএনজি টার্মিনাল ও জ্বালানি পরিশোধন কেন্দ্র। বন্দর ও এনার্জি হাবকে ঘিরে গড়ে তোলা হবে বিশেষ শিল্পাঞ্চল, যেখানে থাকবে স্টিল প্ল্যান্ট, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, সার কারখানাসহ অন্যান্য শিল্প-প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হবে পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশ দ্রুত সময়ে মধ্য আয়ের দেশ এবং এ শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ উন্নত বিশ্বের কাতারে পা দিতে চায়।  এ উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যকে সফল করতে বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিকল্প নেই। সাধ ও সাধ্যের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে এ বিষয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে এগোতে হবে।

সর্বশেষ খবর