শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিশু হত্যার প্রবণতা

প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে

শিশু-কিশোররা যেভাবে অপরাধী চক্রের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে, তা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয়। প্রতিদিনই খুন হচ্ছে কোনো না কোনো শিশু। শিশু নির্যাতনের যে সব ঘটনা ঘটছে তার সংখ্যাও কম নয়। অপরাধী চক্রের সদস্যরা নির্বিবাদে অপহরণ করছে শিশুদের। তাদের মা-বাবা ও স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে হুমকি দিচ্ছে দাবি অনুযায়ী অর্থ না দিলে জিম্মি শিশুকে হত্যা করা হবে। মুক্তিপণ দিয়েও অনেক সময় রেহাই মিলছে না। শিশু অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের কোনো কোনো ঘটনায় ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের সংশ্লিষ্টতাও প্রমাণিত হয়েছে। গত শুক্রবার কেরানীগঞ্জে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে শিশু আবদুল্লাহ। দুই দফায় আড়াই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও তার বাবা-মা সন্তানকে ফেরত পাননি। পরবর্তীতে আবদুল্লাহদের বাড়ি থেকে ১০০ গজ দূরে মায়ের মামার বাড়ি থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। সামাজিক মূল্যবোধ যে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে এ ঘটনা যেন তারই প্রমাণ। আত্মীয়স্বজন বিশেষত রক্তের সম্পর্কধারীদের ওপর আস্থা সামাজিক নিরাপত্তার ভিত্তি বলে বিবেচিত হয়ে আসছে অন্ততকাল ধরে। সে ভিত্তিভূমিতে কীভাবে ভাঙন ধরছে একের পর এক শিশু হত্যাকাণ্ডে আত্মীয়স্বজনের জড়িত থাকার ঘটনা তারই উদাহরণ। এভাবে চলতে থাকলে সামাজিক ভিত যেমন ধসে পড়বে তেমন নিঃশেষ হয়ে যাবে আস্থা রাখার জায়গা। শিশুদের ওপর যারা নিষ্ঠুর হতে পারে তারা মানবিক চেতনাসম্পন্ন যে নয় তাতে দ্বিমত প্রকাশের সুযোগ নেই। এ ধরনের অপরাধীরা যাতে কোনোভাবেই ছাড় না পায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সে ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে। শিশু নির্যাতন, অপহরণ ও হত্যার ঘটনাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হলে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটার ম্যারাথন রেসের সুযোগ সৃষ্টি হতো না। আমরা আশা করব, আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি মানবিক চেতনার দায়বোধ থেকে শিশু নির্যাতন, অপহরণ কিংবা হত্যার ঘটনায় যারাই জড়িত থাক তাদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিতকরণে সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে। কেন এ ধরনের অশুভ মনোবৃত্তি বিস্তার লাভ করছে সে বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের অনুসন্ধানে ব্রতী হতে হবে। আর একটি শিশুও যাতে নির্যাতন অপহরণ কিংবা হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা প্রশাসন তথা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর