মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইস্তিগফারের মরতবা

মাওলানা আবদুর রশিদ

ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার আত্মসমর্পিত মনোভাবের প্রকাশ ঘটে। ইস্তিগফারের মাধ্যমে কৃত অপরাধের জন্য দয়ালু আল্লাহর ক্ষমা যেমন পাওয়া যায় তেমন আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যায়। আখিরাতে যে ব্যক্তির আমলনামায় বিপুলসংখ্যক ইস্তিগফার লিখিত থাকবে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মুবারকবাদ জানিয়েছেন। ইস্তিগফারের মাধ্যমে যেহেতু বান্দার আত্মসমর্পিত মনোভাবের প্রকাশ ঘটে সেহেতু আল্লাহ খুশি হন। তিনি বান্দার গুনা মাফ করে দেন। ইস্তিগফার মানুষকে আত্মগরিমার মনোভাব থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করে ও বিনয়ী করে তোলে। সামাজিক জীবনে যার কল্যাণকর প্রভাব অনুভূত হয়।

ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহ মনের সংকীর্ণতা ও হীনমন্যতা দূর করেন এবং বিপদ থেকে উত্তরণের পথ সৃষ্টি করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত : রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে বান্দা ইস্তিগফারকে আঁকড়ে ধরে আল্লাহ তার জন্য প্রতিটি সংকীর্ণতা ও মুশকিল থেকে নির্গমনের পথ করে দেবেন এবং তার সব দুশ্চিন্তা দূর করবেন ও এমন পন্থায় তাকে জীবিকা দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না। (মুসনাদে আহমদ, সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে ইবনে মাজাহ)।

আল্লাহ তার বান্দাদের ভালোবাসেন। বান্দা আল্লাহর কাছে কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি খুশি হন।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহর কসম, আল্লাহতায়ালা তাঁর মুমিন বান্দার তওবা দ্বারা ওই ব্যক্তির চেয়ে বেশি খুশি হন যে ব্যক্তি কোনো বিজন ভয়ঙ্কর বিপত্সংকুল প্রান্তরে গিয়ে উপনীত হয়েছে, সঙ্গে আছে কেবল তার উটনিটি। তার ওপর আহার্য ও পানীয় দ্রব্যাদি। তারপর সে সেখানে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল এবং তার নিদ্রা এসে গেল। তারপর যখন চোখ খুলল তখন দেখতে পেল যে উটনিটি উধাও। তারপর সে তা খুঁজতে খুঁজতে খরতাপ পিপাসা ইত্যাদিতে এতই কাতর হয়ে পড়ল যে, প্রাণান্তকর অবস্থা হলো। তখন সে ভাবল আমি আমার আগের স্থানে গিয়ে শুয়ে পড়ি এবং আমৃত্যু সেখানেই নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে থাকি। তখন সে বাহুর ওপর মাথা রেখে মৃত্যুর উদ্দেশে শুয়ে পড়ে। তারপর যখন চোখ খুলল তখন দেখতে পেল যে, তার উটনিটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে। তার ওপর তার আহার্য-পানীয় সব কিছুই ঠিকঠাকভাবে রয়েছে। এ ব্যক্তি তার হারানো উটনিটি জিনিসপত্রসহ পেয়ে যে পরিমাণ খুশি হবে, আল্লাহর কসম মুমিন বান্দার তওবায় আল্লাহ তার চেয়ে বেশি খুশি হয়ে থাকেন। (বুখারি ও মুসলিম)।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেশি বেশি ইস্তিগফার করার তাওফিক দিন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর