রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইয়াবা পাচারের নয়া কৌশল

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

ইয়াবার থাবা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তত্পরতা যেমন বাড়ছে তেমন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাচারকারীদের কলাকৌশল। গরুর পেটে অপারেশন করে মাদক রেখে পাচারের ঘটনা ঘটেছে অতীতে। এখন স্কচটেপ পেঁচানো ইয়াবা কলার মধ্যে ঢুকিয়ে সে কলা গিলে খাচ্ছে পাচারকারী দলের সদস্যরা। তারপর সীমান্ত থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচার করে নিয়ে আসছে তারা। এ কৌশলে দুই নারী তাদের পেটে এক হাজার ৮৫০টি ইয়াবা নিয়ে টেকনাফ থেকে ঢাকায় পৌঁছেও শেষ রক্ষা হয়নি। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা তাদের আটক করে দুই দিন ধরে হাসপাতালে রেখে নানা কসরতে পায়খানার সঙ্গে ৭৪টি ইয়াবার প্যাকেট বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া দুই নারী আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, ইয়াবার চালান আনার জন্য তাদের পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। অভাবের সংসারে বাধ্য হয়ে পেটের মধ্যে করে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় এসেছেন তারা। কিন্তু ধরা পড়ায় সব শেষ হয়ে গেল। মতিঝিল থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিল এলাকার শতাব্দী টাওয়ারের সামনে থেকে দুই নারীকে গ্রেফতার করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। পরে এক্স-রে করানো হলে এ দুজনের পেটে ইয়াবা থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিত্সকদের সহায়তায়  দুই দিনে ওই দুই নারীর পায়খানার সঙ্গে ৭৪টি  ইয়াবার প্যাকেট বের হয়। প্যাকেট থেকে সর্বমোট এক হাজার ৮৫০টি ইয়াবা জব্দ করা হয়। আলোচ্য ঘটনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিতে না পারলেও স্বীকার করতেই হবে রাজধানীসহ সারা দেশে ইয়াবার আগ্রাসন প্রতিদিনই বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের নজরদারি এড়িয়ে প্রতিদিনই চলছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার।  কুরিয়ার সার্ভিস, মাছসহ নিত্যপণ্যের চালানের ভিতর মাদক লুকিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন লক্ষ্যস্থলে পাঠানো হচ্ছে। মাদক পাচারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা যে যথেষ্ট নয়, তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্যি। এই দৈত্যকে থামাতে একই সঙ্গে সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর