বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

হজরত মূসা (আ.) এর জান্নাতি সঙ্গী

মাওলানা আবদুর রশিদ

একদিন হজরত মূসা (আ.) কোহেতুরে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহ জান্নাতের মধ্যে আমার সাথী হবে এমন কোনো ব্যক্তি বর্তমানে দুনিয়াতে আছে কিনা? আল্লাহপাক বলেন, হ্যাঁ আছে। দামেস্ক শহরে আলী বিন মোয়াফেক নামে যে গোশত বিক্রেতা আছে সে জান্নাতের মধ্যে তোমার সাথী হবে। তা শুনে মূসা (আ.) আনন্দিত হয়ে দামেস্কের দিকে ছুটলেন। তার অন্তরে কত শত খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তিনি দুনিয়াতে থাকতেই তার জান্নাতের বন্ধুর সাক্ষাৎ পাবেন। আহার নিদ্রা ত্যাগ করে বহু পরিশ্রমের পর নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি গোশত বিক্রি করছে, কিন্তু তার বিশ্রী চেহারা দেখে সন্দেহ করে নাম জিজ্ঞেস করে দেখেন নামও ঠিক আছে। কিছুক্ষণের মধ্যে গোশত বিক্রি শেষ করে কসাই গোশতের কয়েক টুকরো থলিতে ভরে বাড়ির দিকে চললেন। মূসা (আ.)-ও তার পিছনে পিছনে চললেন। কসাই ঘরে গিয়ে নিজ হাতে গোশত পাকালেন, নিজ হাতে রুটি তৈরি করে তার বৃদ্ধ মাতাকে অতি যত্নে রুটি গোশত খাওয়াতে লাগলেন। চামচ দিয়ে গোশতের ঝোল তার মুখে তুলে দিলেন। তৃপ্তির সঙ্গে খাওয়ানোর পর মায়ের মুখখানা মুছে দিলেন এবং মায়ের কাপড় ধুয়ে দিলেন। তার মা দুই হাত তুলে ক্ষীণকণ্ঠে কি যে উচ্চারণ করলেন। কসাই মূসা (আ.)-কে চেনেন না এবং তার কাছে কিছু জিজ্ঞেস করেন না।

মূসা (আ.) সবই নিজ চোখে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ভাই এই বৃদ্ধা আপনার কে হয়? কসাই বললেন, ইনি আমার মা হন। মূসা (আ.) বললেন, আপনি তাকে রুটি খাওয়ানোর পর তিনি হাত তুলে কি বললেন? কসাই বললেন, ভাই শুনলে আপনি হেসে ফেলবেন, এটা আমার মায়ের একটা অভ্যাস। তিনি প্রত্যহ খানা খাবার পর আমার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে এরূপ মোনাজাত করে থাকেন। বর্তমান জমানায় মূসা (আ.) আমাদের নবী, আমরা তার উম্মত। যদিও তার সাক্ষাৎ আমাদের ভাগ্যে জোটেনি তবু আমরা তাকে ভক্তি করি। হাশরের দিন তার শাফায়াতের আশা রাখি। আমার মা প্রত্যহ মোনাজাত করে বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমার ছেলেকে জান্নাতের মধ্য আমাদের নবী মূসা (আ.)-এর বন্ধু করে দিও। মূসা (আ.) আশ্চর্য হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহপাক তোমার মায়ের দোয়া কবুল করেছেন। আমিই যে মূসা নবী।  আপনি সত্যিই ধন্য। আল্লাহপাক বলে দিয়েছেন, জান্নাতে আপনি আমার বন্ধু হবেন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর