মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফিরে আসুক পাটের সুদিন

বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করুন

পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, এখন থেকে পাট উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কৃষিপণ্য যেসব সুবিধা পায় তা পাটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। রবিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী পাটমেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ ঘোষণা তাত্পর্যের দাবিদার। পাটকে অভিহিত করা হয় সোনালি আঁশ হিসেবে। এ দেশের অর্থনীতিতে একসময় পাটের অবস্থান ছিল প্রাণভোমরার মতো। স্বাধীনতার আগে বৈদেশিক মুদ্রার সিংহভাগ আসত পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে। দেশের শিল্প খাতও ছিল অনেকটা পাটনির্ভর। কালের বিবর্তনে পাট তার অবস্থান হারিয়েছে। কৃত্রিম তন্তুর আবিষ্কার পাটকে বহুক্ষেত্রে কোণঠাসা করে ফেলেছে। পাটের এ আপাত হারের জন্য গবেষণাগত ঘাটতিও কম-বেশি দায়ী। পরিবেশবান্ধব এ তন্তু মূলত ব্যবহার হতো চাল, গম, আটা, চিনি ইত্যাদি পণ্যের প্যাকেট হিসেবে। কৃত্রিম তন্তুর দাম সস্তা হওয়ায় পাট প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে এর সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। পাট দিয়ে উন্নতমানের কাপড়, জুতা, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, কার্পেটসহ নানা পণ্য তৈরি করা সম্ভব। আশার কথা সরকার সেদিকে এগোনোর চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশে এখন ১৩১ ধরনের পাটপণ্য তৈরি হচ্ছে। চাল, গম ইত্যাদির ক্ষেত্রে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কৃত্রিম তন্তুর আগ্রাসন থেকে দেশের প্রকৃতিকে বাঁচানোর লক্ষ্যে প্যাকেজিং অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশেই ২০ লাখ কাঁচা পাটের অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করা হয়েছে। পাটকে কৃষিপণ্যের মর্যাদা দেওয়ায় এ পণ্যের উৎপাদন, বাজারজাত এবং রপ্তানিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে। দেশের কৃষি অর্থনীতিতে পাট এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ সে কারণে প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করব পাটের অস্তিত্ব রক্ষায় এর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ জন্য পাট নিয়ে গবেষণা বাড়াতে হবে। এ মুহূর্তে ১২০টি দেশে পাটপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এ বাজার আরও সম্প্রসারণ হবে। পাট আবারও হয়ে উঠবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর