রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্যাস দুর্ঘটনা

বিপর্যয় এড়াতে সচেতনতা বাড়াতে হবে

রাজধানীর বনানীতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে ছয়টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়তলার একটি ভবন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গ্যাস বিস্ফোরণের এ ঘটনায় আগুনে তিনজন দগ্ধ হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি করে ভবন থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছে আরও ২২ জন। বনানীর ব্লক বি, রোড ২৩-এর সিলভার স্টোন সাফারি নামের ছয়তলা ভবনের কাছে বিকট শব্দে গ্যাস পাইপে বিস্ফোরণের পর ভবনটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের কর্মীরা রাতভর চেষ্টা চলিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সিলভার স্টোন সাফারি নামের ভবনটির সামনে রাস্তা কেটে ওয়াসার কাজ চলছিল তিন দিন ধরে। এ সময় গ্যাস লাইন ফুটো হয়ে গ্যাস বেরুতে থাকে। এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো সত্ত্বেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। রাজধানীতে গ্যাস দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। গত ৮ মাসে গ্যাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানির শিকার হয়েছেন ৩১ জন। আহতের সংখ্যাও বিপুল। গ্যাস লাইনের ত্রুটি সম্পর্কে তিতাসের হটলাইনে ফোন করে প্রতিকার পাওয়া যায় না বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক। বনানীর গ্যাস পাইপ লাইনের ত্রুটি সম্পর্কে অভিযোগ করার পর সময়মতো পদক্ষেপ নিলে এ দুর্ঘটনা যে এড়ানো যেত তা বুঝতে কারও কষ্ট হওয়ার কথা নয়। রাজধানীতে তিতাস গ্যাসের বৈধ সংযোগের সংখ্যা ১৫ লাখ। অবৈধ সংযোগও নাকি বিপুল। আমাদের দেশ ছাড়া দুনিয়ার কোথাও গৃহস্থালি পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য পাইপ লাইনের সাহায্যে গ্যাস সরবরাহ করা হয় না। বিভিন্ন সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়ি কাজের জন্য পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাও প্রায়শই ঘটছে।  গ্রাহকদের ব্যাপারে যে দায়বদ্ধতা থাকা উচিত তার অভাব থাকায় দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গ্যাস দুর্ঘটনার জন্য অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অসচেতনতা এবং দায়িত্বহীনতাও দায়ী। সব পক্ষের দায়িত্বশীলতাই গ্যাস দুর্ঘটনা এড়ানোর যে সর্বোত্তম পথ তা সহজে অনুমেয়। সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

সর্বশেষ খবর