মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

বোরো উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে

কৃষকদের উৎসাহ সৃষ্টির উদ্যোগ নিন

বোরো ধানের চাষ লাভজনক না হওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষক। কয়েক বছর ধরে ধানের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় বহু ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচও ওঠানো দায় হয়ে পড়েছে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধান উৎপাদন করে তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাজার ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে। দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও ভারত থেকে চাল আমদানিও কৃষকের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা—ইউএসডিএর বৈদেশিক কৃষিসেবা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোরো উৎপাদনে যে খরচ হয় ধান বিক্রি করে ১৮ শতাংশ কম টাকা ওঠে কৃষকের ঘরে। ফলে বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ২০ হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে। প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আউশ ও আমন ধানে সার, বীজ ও নগদ টাকা প্রণোদনা দেওয়ায় গত দুই মৌসুমে আউশ ও আমন ধানের উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে। বোরো চাষে কৃষকদের উৎসাহ হারানোর চিত্র ফুটে উঠেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যেও। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ফসল চাষের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ৪৬ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। সহযোগী দৈনিকে কৃষিমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, কৃষকরা বোরোর চেয়ে আউশ ও আমন চাষে যাতে বেশি আগ্রহী হয় সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করছে। গম, ভুট্টা, আলু, তেল ও ডাল জাতীয় ফসলের চাষে কৃষককে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বোরো চাষ কমে অন্য ফসলের চাষ বৃদ্ধি পাওয়াকে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষির জন্য ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ না করেও বলা যায়, বোরো যেহেতু সবচেয়ে বড় ফসলের মৌসুম সেহেতু কৃষক বোরো চাষে উৎসাহ হারালে মোট

ধান উৎপাদনের ওপর তা প্রভাব ফেলবে। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে দেশ তা ধরে রাখতে হবে। খাদ্যের ক্ষেত্রে পরনির্ভর হওয়া অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেয়। ১৯৭৪ সালে এ ক্ষেত্রে তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ। তার পুনরাবৃত্তি রোধে খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় সতর্কতা অবলম্বনই হবে সর্বোত্তম উপায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর