বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

আইনশৃঙ্খলায় বিসংবাদ

হুমকি সৃষ্টিকারীদের নিবৃত্ত করুন

দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য হঠাৎ করেই বিসংবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে পরপর সংঘটিত কয়েকটি ঘটনা। সোমবার কাশিমপুর কারাগারের খুব কাছে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন এক সাবেক কারারক্ষী। একই দিন রাজধানীর কলাবাগানে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় মজুমদার। এর দুই দিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী নিহত হন। একদিন আগে রাজশাহীতে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিজের রিভলবারের গুলিতে নিহত হয়েছেন রহস্যজনকভাবে। দেশে যখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দৃশ্যমান সুদিন বিরাজ করছে, তখন পর পর কয়েকটি হত্যাকাণ্ড জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। জননিরাপত্তা তো বটেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও তা কম-বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। গত বছরের প্রথমভাগে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস জননিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মূর্তমান চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছিল। পেট্রলবোমানির্ভর এই অপরাজনীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিল দেশের মানুষ এবং তার ওপর ভর করে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়। তারপর থেকে টানা এক বছর দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলার অবনতিশীল অবস্থা। মনে করা হচ্ছে মহলবিশেষ দেশের আইনশৃঙ্খলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অশুভ মিশনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার হত্যার ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৬-১৭ জন প্রাণ হারাচ্ছে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হত্যার রেশ না কাটতেই রাজধানীর কলাবাগানে কমান্ডো কায়দায় মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা চালিয়ে বন্ধুসহ তাকে হত্যার ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধারণ করা হয়, আইএসের নাম ভাঙিয়ে দল বিশেষের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলা হচ্ছে। জননিরাপত্তার স্বার্থেই আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী চক্রকে নিবৃত্ত করা সরকারের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।  রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও বিষয়টি জরুরি এবং তা কোনোভাবেই উপেক্ষিত হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর