মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিঙ্গাপুরে অটুট থাকুক আমাদের শ্রমবাজার

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

সিঙ্গাপুরে অটুট থাকুক আমাদের শ্রমবাজার

আবারও সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সেই দুঃসংবাদ, যা আমাদের হৃদয়কে পুনরায় নাড়া দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়েছে ১৩ বাংলাদেশিকে। তারা দেশে ফিরে গুপ্তহত্যাসহ সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। এ অভিযোগে আটক ১৩ জনের মধ্য থেকে পাঁচজনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তাদের ৩ মে রাজধানীর বনশ্রী থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গত বছরের ডিসেম্বরে ২৭ বাংলাদেশি শ্রমিককে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফেরত পাঠায় সিঙ্গাপুর সরকার। তখন তাদের কাছে ‘জিহাদি’ বইপত্র পাওয়া গিয়েছিল বলে জানানো হয়। এবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বানানোর কায়দাসংবলিত বইপত্র ছিল বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আটক দলটির নেতা হিসেবে উঠে এসেছে মিজানুর রহমান নামক একজন এস-পাস হোল্ডার নির্মাণ খাতের শ্রমিকের নাম। বলা হচ্ছে, এ বছরের মার্চে তিনি আইএসবি নামে একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন এবং এর সাতজন সদস্য জোগাড় করেন। এরা সবাই কর্মী ভিসায় নির্মাণশ্রমিক ও শিপইয়ার্ডে কাজ করছিলেন। ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এরা সবাই সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। এবারই প্রথম সিঙ্গাপুরের আইএসএ আইনের আওতায় ১৩ বিদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে আটজন বর্তমানে সিঙ্গাপুরের ডিটেনশন সেলে বন্দী।

উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে দেশটিকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করেছে সে দেশটির নাম সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরে কোনো বাংলাদেশি জঙ্গি তত্পরতায় জড়িত হবে তা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, অনাকাঙ্ক্ষিতও। বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য কলঙ্কের তিলক হয়ে উঠেছে এ ঘটনা। আমাদের দেশের মর্যাদা ও অর্থনীতির জন্যও এটা সুখকর নয়। সিঙ্গাপুরের মতো আধুনিক, সুশাসনসংবলিত উন্নত দেশে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক জঙ্গিসম্পৃক্ততায় থাকতে পারেন, তা আমাদের জন্য ভীষণ লজ্জার। সেই কলঙ্কের তিলক যদি বার বার লাগে তাহলে এ লজ্জা এড়ানোর কোনো উপায় থাকবে না। কেননা সিঙ্গাপুর আমাদের দেশের মানুষের জন্য উপার্জনের একটি বড় উৎস।

সিঙ্গাপুর পরিভ্রমণ ও সীমিত অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে অন্তত আমি এটুকু বুঝতে পেরেছি, মাল্টিকালচারালের সমন্বয়ে গড়া দেশটির সমাজব্যবস্থা এক অনন্য বৈশিষ্ট্যের দাবিদার; যা দেশটিকে একটা স্বাধীন, স্বকীয় ও স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশে সহায়তা প্রদান করেছে। পৃথিবীর সব দেশের মানুষকে এক জায়গায় এনে একই ছাতার তলে বসবাসের এক অনন্য ক্ষেত্র হচ্ছে সিঙ্গাপুর। এ তত্ত্বের রূপকার সিঙ্গাপুরের জাতির জনক লি কুয়ান ইউ। সিঙ্গাপুরের বর্তমান সরকার ও সে দেশের প্রত্যেক নাগরিক লি কুয়ান ইউর পথ ধরেই এগিয়ে চলেছেন। তাই দেশটিতে বিচিত্রতার মধ্যে গড়ে উঠেছে অনবদ্য এক ঐক্য। যে ঐক্য তাদের নিয়ে গেছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা অনুপম নৈসর্গিক দৃশ্যসম্পন্ন স্বপ্নছোঁয়ার দেশে। যে ঐক্য তাদের শিক্ষা দিয়েছে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করতে নেই, বৈষম্যের শিকার করতে নেই। ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে পরস্পরে একই ধারায় মিলিত হওয়ার শিক্ষা মূলত এ দেশটির মাধ্যমে আমরা পেয়ে থাকি। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সব ক্ষেত্রে একধরনের শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে এই দেশটিকে। তাই লি কুয়ান ইউর নিজের হাতে গড়া দেশটির সামান্য বিচ্যুতি, সামান্য শৃঙ্খলাহানি শুধু সিঙ্গাপুর সরকার কেন পৃথিবীর কোনো সভ্য মানুষ বরদাস্ত করতে পারে না। লি কুয়ান ইউ শুধু দেশটিকে সিঙ্গাপুরিয়ানদের জন্য তৈরি করেছেন তা নয়, পৃথিবীর সব দেশের সব অঞ্চলের মানুষের মিলনক্ষেত্র হিসেবে তিনি গড়ে তুলেছেন সিঙ্গাপুরকে। এখানে শুধু সিঙ্গাপুরিয়ান নয়, বিশ্বের সব দেশের মানুষ ছোট-বড় নানা পেশায় মর্যাদার সঙ্গে নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। সুখে-শান্তিতে  একে অন্যের হাত ধরে বসবাস করছে। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সার্বিক সমাজজীবনে সুখ ও শান্তির অনাবিল লীলাক্ষেত্র হলো সিঙ্গাপুর। যেখানে ছিনতাই-রাহাজানির মতো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। অপরাধের মাত্রাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রতিটি নাগরিক। ট্রাফিক সিগন্যালে লাল বাতি জ্বলার পর সিগন্যাল অমান্য করার রেকর্ড মোটেই নেই। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া কেউ ময়লা-আবর্জনা ফেলে না। পথচারীরা নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া রাস্তা পারাপার হয় না। কোনো নাগরিক যত্রতত্র থুতু ফেলে না। যেখানে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শপিং মল মোস্তফা শপিং সেন্টার খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টা। প্রয়োজনে ডাকলেই মুহূর্তের মধ্যেই হাজির হয় অ্যাম্বুলেস, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের সেবা প্রদানকারী।

বলা বাহুল্য, বর্তমান বৈশ্বিক যুগে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের কদর দিন দিন কমে আসছে। তৈরি পোশাক ছাড়া আর কোনো পণ্যের ব্যাপারে আমাদের দাপট দেখানোর কোনো জায়গা নেই। এ ক্ষেত্রে শুধু মানবসম্পদ প্রেরণ করে আমরা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির রিজার্ভ বাড়িয়ে একটা বুনিয়াদ রচনা করতে সক্ষম হয়েছি। অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য তৈরি করতে পেরেছি। গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ সাধনসহ একটা মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছি এই জনশক্তি প্রেরণের মাধ্যমে। কিন্তু সিঙ্গাপুরে জঙ্গি সন্দেহে বাংলাদেশি শ্রমিকের আটক, তাদের গ্রেফতার আমাদের শ্রমবাজারকে একটা প্রশ্নের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে যে এক লাখ শ্রমিক কাজ করছে গুটিকয় বিপথগামী মানুষের জন্য যাতে তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। সিঙ্গাপুর সরকারও নিশ্চয় জানে সেখানে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সিংহভাগই শান্তিপ্রিয় এবং তারা সিঙ্গাপুরের উন্নয়নে মূল্যবান ভূমিকা রেখে আসছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ যে জঙ্গিদের দেশ নয়, সন্ত্রাসী লালন-পালনের ঘাঁটি নয়, উগ্রবাদের জন্মদাতা নয়, এই বিশ্বাস ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে আমাদের নিজেদেরই। তাই আমরা জঙ্গিবাদকে যে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিই না, দেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান, সব দলের সমান সুযোগ রয়েছে রাজনীতি করার— এরও প্রমাণ দিতে হবে বিশ্ববাসীর সামনে। আমাদের গোয়েন্দা শাখার রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ‘সিঙ্গাপুরে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতায় যাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস বা আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তারা মূলত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য।’ তা ছাড়া এদের ওপর সব গোয়েন্দা সংস্থার সর্বদা নজরদারি রয়েছে। তাই সিঙ্গাপুরে যেসব ঘটনা ঘটছে তা বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন। এজন্য কয়েকজন মানুষের কৃত অপরাধের শাস্তির খড়্গ যেন সবার ওপর নেমে না আসে সেদিকে সবার নজর দিতে হবে। এমনকি সিঙ্গাপুর সরকারকেও যৌক্তিক বিবেচনায় ঘটনাটি নিয়ে ভাবতে হবে। যৌথভাবে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। যাতে কোনোভাবেই শান্তিপ্রিয় সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের দেশের ঘনিষ্ঠ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কগুলো নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭৯ সালে সর্বপ্রথম ১১০ জন বাংলাদেশি সিঙ্গাপুরে কাজ করতে যান। কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে আজ লক্ষাধিকের ওপরে চলে গেছে। ভারতীয় শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতন, দক্ষ ও কঠোর পরিশ্রমী হওয়ায় দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু চার মাসের ব্যবধানে পরপর দুই দফা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার খবর সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। তবে সরকার ও সিঙ্গাপুরে কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো আন্তরিক হলে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরিচিতি রয়েছে ভালো ও পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে— এ সুনাম ধরে রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সিঙ্গাপুর সরকারকে বোঝাতে হবে বাংলাদেশ সরকার সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

প্রয়োজনে জঙ্গি দমনে একে অন্যের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে বাংলাদেশ। ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সবাইকে এক হতে হবে। একজনের ভুলে বা কৃতকর্মে যেন অন্য সবার ভোগান্তি না হয় সেই মানবিক দৃষ্টি নিয়ে সব কিছু বিচার করতে হবে। সিঙ্গাপুরের মতো একটা মানবিক সরকারের কাছে এটাই তো আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের যে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক আছে তাতে যেন কোনোক্রমেই ছেদ না পড়ে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের শ্রমিক নেওয়া বন্ধ। যে কটি দেশে কর্মী প্রেরণ চালু রয়েছে তার মধ্যে সিঙ্গাপুর অন্যতম। তাই যাতে কোনোভাবেই সিঙ্গাপুরে জনশক্তি রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেদিকে সবার দৃষ্টি দিতে হবে। যে ১৪টি রিক্রুটিং এজেন্সি সিঙ্গাপুরে কর্মী প্রেরণ করে তাদের উচিত হবে কর্মী নিয়োগ ও প্রেরণের আগে তাদের বাবা-মায়ের পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া। প্রয়োজনে পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা যেতে পারে। সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন সেখানে অবস্থানকারী বাংলাদেশি কর্মীদের ব্যাপারে সর্বদা খোঁজখবর নেওয়াসহ তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে অন্যায় ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। একই সঙ্গে বাংলাদেশি কর্মীদের সিঙ্গাপুরের নিয়ম-কানুন অনুসরণ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মতো সামাজিক আচরণ মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

পরিশেষে বলা যায়, দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন সিঙ্গাপুর সরকারের নৈতিক দর্শন। এ দর্শনের সঙ্গে আমরাও একমত। তাই অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত হোক, আমরা এমনটাই দেখতে চাই। কারও কোনো ষড়যন্ত্র থাকলে তাও বেরিয়ে আসুক। এ ধরনের হঠকারী ঘটনাকে বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বলে হেলাফেলা করা যাবে না। তাই সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণে কোনো প্রকার নেতিবাচক প্রভাব পড়ুক তা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুরের চিরায়ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কোনো অবনতি আমরা আশা করি না। এ কথা সত্য যে, জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যা। পৃথিবীর অনেক দেশ এর খেসারত দিচ্ছে। তাই এ ক্ষেত্রে আমাদেরও সতর্ক হয়ে পথ চলতে হবে। কেননা আমরা পৃথিবীর বাইরের কেউ নই। বৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে যেসব বহুমাত্রিক ও সম্প্রসারণশীল ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো যৌথ ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির মাধ্যমে অতিক্রম করা সম্ভব।

আমাদের ভাবা উচিত অভিবাসী প্রেরণের মাধ্যমে দুই দেশই উপকৃত হচ্ছে। তাই এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সংকট মোকাবিলা করতে হবে। মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলে নয়, মাথা রেখেই চিকিৎসা করা উচিত। সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের ওপর এসব ঘটনার প্রভাব যাতে না পড়ে সেদিকে সরকারের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিএমইটি ও সিঙ্গাপুর সেন্ডিং রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে কর্মী সুরক্ষা প্রদানসহ সচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো বিশৃঙ্খল ঘটনার কারণে বাংলাদেশের এই বিরাট জনশক্তি রপ্তানি খাত যেন বিপর্যয়ের মধ্যে না পড়ে সেদিকে সবার দৃষ্টি দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, দুই দেশের সম্পর্কের কোনো প্রকার অবনতি আমাদের শ্রমবাজার ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা আমরা কখনই কামনা করি না। সিঙ্গাপুরের উন্নয়নের অংশীদার আমাদের শ্রমিকদের ঘামের মূল্য যেন বিফলে না যায়। যাতে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অব্যাহত থাকে আমাদের শ্রমবাজার, এটাই সবার প্রত্যাশা।

লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এবং শ্রম অভিবাসন বিশ্লেষক

[email protected]

সর্বশেষ খবর