মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

আল্লাহর ভয় মানুষকে গুনা থেকে দূরে রাখে

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান

জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বান্দা আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সে কিছুই করতে পারে না। এ আকিদা যার অন্তরে থাকবে অবশ্যই আল্লাহর প্রতি তার আজমত হবে এবং এর দ্বারা নামাজে খুশু-খুজু সৃষ্টি হয়। কারও প্রতি ভয় হলে তাকে সম্মানপূর্বক অনুসরণ করা হয়। ভয় না হলে সম্মানও করা হয় না, অনুসরণও নয়। প্রকৃতপক্ষে কারও প্রতি ভয় সৃষ্টি হওয়ার জন্য শর্ত হলো তার মাঝে সে যোগ্যতা থাকা। অনেক লোক আছে, তারা বাস্তবে বড় ও প্রভাবশালী কিন্তু অন্যের অন্তরে তার ভয় নেই, প্রভাবও নেই। ফলে তার  প্রতি বিনয় সৃষ্টি হয় না। সুতরাং কারও প্রতি ভয় সৃষ্টি হওয়ার জন্য তার বড় হওয়াই যথেষ্ট নয় বরং তার মধ্যে ভয়ের যোগ্যতা থাকতে হবে। আল্লাহ অতি মহান, তার মধ্যে সর্বযোগ্যতা রয়েছে। সুতরাং তাকে ভয় করার দ্বারা তার প্রতি অন্তরে স্বাভাবিকভাবেই বিনয় সৃষ্টি হবে, নামাজ পড়ার সময়ই যার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটবে। আর এটাই তো নামাজের খুশু-খুজু।

আল্লাহকে ভয় করার দুটি কারণ :

ক. শাস্তির ভয়। কারও অনিষ্ট বা শাস্তি হতে বাঁচার জন্য ভয় সৃষ্টি  হয়। তাকে যদি ভয় না করা হয় তাহলে তার ক্ষমতা আছে শাস্তি দেওয়ার, তাই তার শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য তাকে ভয় করা।

খ. মহব্বতের ভয়। কারও প্রতি মহব্বত হলেও তাকে ভয় করতে হয়, যাতে এ মহব্বত সর্বদা থাকে। কোনো সময় তার মহব্বতের রশি যাতে কেটে না যায় সেজন্য ভয় করা। অর্থাৎ বিচ্ছেদের আশঙ্কায় ভয় করা।

আল্লাহকে যে ভয় করা হয় তাও এ দুই কারণে। আল্লাহর ক্ষমতা আছে কাউকে জাহান্নামে দেওয়ার, তাই বান্দা সর্বদা আল্লাহকে ভয় করে জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য। দ্বিতীয়ত, বান্দা আল্লাহকে প্রথম মহব্বত করে এরপর ভয় করতে থাকে, যাতে তার মহব্বত দূর না হয়ে অব্যাহত থাকে। দুটির মাঝে আসল হলো মহব্বতের ভয় করা। জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য তাকে সবাই ভয় করে। কিন্তু মহব্বতের রশি ঠিক রাখার জন্য ভয় করে এমন লোক অতি অল্প। রসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহকে মৃত্যু পর্যন্ত যে ভয় করতেন, তা ছিল মহব্বতের ভয়। কেননা দুনিয়াতেই বলা হয়েছে যে, জাহান্নাম তার জন্য হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে বান্দাদের মাঝে আলেমরাই আল্লাহকে ভয় করে।’ এখানেও দ্বিতীয় প্রকারের ভয় তথা মহব্বতের ভয়ের কথাই বলা হয়েছে।

আল্লাহর প্রতি ভয় থাকলে গুনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন, মানুষ এদিকে লক্ষ্য করে গুনা থেকে বেঁচে থাকে। কারণ গুনা করলেই আল্লাহ দেখবেন, অতঃপর এর শাস্তি পেতে হবে। উস্তাদ ও পিতা-মাতা সামনে থাকলে কোনো গুনা করার হিম্মত হয় না। অনুরূপ ‘আল্লাহ সর্বদাই সব স্থানে সমানে উপস্থিত থাকেন’ এ বিশ্বাস অন্তরে বদ্ধমূল থাকলে গুনা করা সম্ভব হবে না।

 

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা

সর্বশেষ খবর