রবিবার, ১৫ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

ম্যাডাম, মান্নান ভূঁইয়ার সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ভাবুন

কাজী সিরাজ

ম্যাডাম, মান্নান ভূঁইয়ার সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ভাবুন

বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হয়েছে ১৯ মার্চ ২০১৬। আজ ১৫ মে। কম সময় তো নয়— এক মাস ২৭ দিন। এত দিনেও দলের কার্যক্রম চলছে তামাদি কমিটি দিয়ে। স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন বা জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পর কাউন্সিল-পূর্ব কমিটি আর বলবৎ থাকে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কমিটি বিলুপ্ত বলে বিবেচনা করা হয়, কোনো কোনো সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবেও পূর্বেকার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে।  গঠিত হয় নতুন কমিটি, নতুন নেতৃত্ব। বিএনপির ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এর ব্যতিক্রম। কোনোটাই করা হয়নি।  কাউন্সিলের আগেই অবশ্য চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহাসচিব, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ‘বিতরণ’ করা হয়েছে জাতীয় কাউন্সিলের আমেজ কেটে যাওয়ার বেশ কিছু দিন পর। দলের ‘নীতিনির্ধারণী’ স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যানমণ্ডলী, উপদেষ্টামণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী ও নির্বাহী কমিটির কোনো খবর এই লেখা তৈরির সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী তামাদি কমিটি দিয়ে কাজ চলে না। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিএনপিতে চলছে। গেল সপ্তাহে মিডিয়ায় খবর হয়েছে যে, পার্টি চেয়ারপারসন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যাদের নাম ছাপা হয়েছে তারা কাউন্সিল-পূর্ব কমিটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। কাউন্সিলে দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্বাচন অনুমোদন করা হয়। কিন্তু স্থায়ী কমিটিসহ অন্যান্য কমিটির ‘নসিবে’ কী আছে তা বলা হয়নি। যদি কাউন্সিলে বলা হতো যে, নতুন করে ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ লেটার ইস্যু না হওয়া পর্যন্ত পুরাতন কমিটির সবাই স্বপদে বহাল থাকবেন তাহলে তামাদি কমিটি দিয়ে কাজ চালানোর একটা যুক্তি থাকত। কিন্তু তা করা হয়নি। অপরদিকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নতুন করে নিয়োগদানের পর স্পষ্ট হয়েছে, আগের কমিটিতে যারা এসব পদে ছিলেন, কাউন্সিলের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেসব পদাধিকারীর পদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মোহাম্মদ শাহজাহান, আমানউল্লাহ আমানসহ অনেকেই পূর্ব পদে বহাল নেই। তাহলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, আগের কমিটির বিভিন্ন পদাধিকারীরা কি স্বপদে বহাল আছেন? তারা কি এখন তাদের পূর্ব পদ-পদবি ব্যবহার করতে পারবেন? পারার কথা নয়। কারও হয়তো প্রমোশনও হয়ে যেতে পারে, কিন্তু কারও দশা যে মোহাম্মদ শাহজাহান বা আমানউল্লাহ আমানের মতো হবে না তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে? কাউন্সিলে যেহেতু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি তাই সব কমিটিই তামাদি হয়ে গেছে। বিএনপির গঠনতন্ত্র সব কমিটি গঠন, সদস্যদের মনোনয়ন, পদ-পদবি বণ্টনের সময় ক্ষমতা পার্টি চেয়ারপারসনকে দিয়েছে; কিন্তু গঠনতন্ত্রের কোনো ধারা-উপধারায় তামাদি কমিটি দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি। তাহলে এটা কি কেউ বলতে পারেন না যে, স্থায়ী কমিটির নামে যে সভাটি গত সপ্তাহে হয়ে গেল তা বিধিসম্মত বা দলের গঠনতন্ত্রসম্মত হয়নি। যারা সভায় উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই দলের প্রবীণ ব্যক্তি। স্থায়ী কমিটি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের সভাকে দলের প্রবীণদের সঙ্গে বা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে পার্টি চেয়ারপারসনের সভা বা বৈঠক বললে কোনো বিতর্ক হতো না।

পর্যবেক্ষক মহলে বড় যে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে এবং দলের সাধারণ নেতা-কর্মী ও উত্সুক সাধারণের মনেও যে প্রশ্নটি জেগেছে, তা হচ্ছে জাতীয় কাউন্সিলের পৌনে দুই মাস পরও কেন নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না, কেন দলের নীতিনির্ধারণী কমিটি গঠনও ঝুলে আছে? দেশে যারা গণতন্ত্র ও সুশাসন চান, যারা একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সুষম সমাজ চান, তারা বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক ও প্রভাবক শক্তিসমূহের ভালো-মন্দ, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে কথা বলতেই পারেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এমন আলোচনায় থাকবেই; কেননা, এ দুটি দলই আমাদের দেশের প্রধান ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল। মুশকিল হচ্ছে কোনো সমালোচনা যদি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যায় তো সমালোচক বিএনপি-জামায়াতের লোক, এমনকি রাজাকার বলে ‘আক্রান্ত’ হন, আর যদি তা বিএনপির বিপক্ষে যায়, সমালোচক বা পরামর্শক হয়ে যান বাকশালী বা নব্য বাকশালী। আওয়ামী লীগের সমালোচনা হলে তাদের দলীয় লোকজন বা তাদের পক্ষের বুদ্ধিজীবী মহল, সংস্কৃতিসেবীরা ক্ষিপ্ত হন, রুষ্ট হন; সমালোচনা-পরামর্শের জবাবও দেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, বিএনপির সমালোচনা হলে বিএনপির চেয়েও বেশি ‘জ্বলে’ জামায়াতের। বিএনপির বন্ধুভাবাপন্ন কেউ বিএনপির কোনো গঠনমূলক সমালোচনা করলে বা পরামর্শ দিলে জামায়াতের তীব্র প্রতিক্রিয়া খুবই রহস্যময়। মায়ের চেয়ে যেন মাসীর দরদ বেশি। আসলে তো মায়ের চেয়ে বেশি দরদ দেখায় ডাইনি। লেখার শেষাংশে এ ব্যাপারে আরও কিছু বলব।

বিএনপি এখন একটা নাজুক পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ যাবৎকাল এমন সংকটে পড়েনি বিএনপি। ভুল ‘রণনীতি’ ও ভুল ‘রণকৌশলের’ কারণে ২০০৭ সালের পর, তথা ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তনের পর থেকে সংগঠন অনেকটা তছনছ হয়ে গেছে। ক্ষমতায় থাকাকালে আদর্শচ্যুতি, দলের লোকজনের দুর্নীতি, দল ও সরকারে স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের খেসারত দিচ্ছে দলটি। দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থেকেও দলের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন, দলের জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছেন, দল আর সরকারকে সমার্থক না বানিয়ে অর্থাৎ দলকে সরকারি দল না বানিয়ে সরকারকে দলীয় সরকারে রূপ দিয়েছিলেন। সিনিয়র কয়েকজন ছাড়া সরকারের মন্ত্রী-মিনিস্টাররা দলের দায়িত্বশীল কোনো পদে ছিলেন না। দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। মন্ত্রী-এমপিরা জেলার নেতা হতে পারেননি। জিয়ার শাহাদাতবরণের পর সেই সাংগঠনিক নীতিমালা আর মানা হয়নি। দল হয়ে গেছে সরকারি দল; চলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং হালুয়া-রুটি ভাগাভাগির প্রতিযোগিতা। দুর্নীতির প্রসার ঘটে তৃণমূল স্তরেও। লুপ্ত হয়ে যায় নেতা-কর্মীদের নৈতিকতার জোর। নিঃস্বার্থ, আদর্শবাদী নিবেদিতপ্রাণ অগণিত নেতা-কর্মী দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কেন্দ্রের মতো তৃণমূলেও দল বন্দী হয়ে পড়ে ব্যক্তি বিশেষ, পরিবার বিশেষ ও গোষ্ঠী বিশেষের হাতে। যিনি এমপি তিনিই স্বীয় থানায় দলের মালিক-মোক্তার। তার পরে হয় তার স্ত্রী, নতুবা সন্তান অথবা কোনো পরমাত্মীয়। যারা দল গড়েছেন, দলের জন্য লড়েছেন তারা কেউ না, কিছু না। তৃণমূল সংগঠনের মূল নেতৃত্ব নিয়ন্ত্রণ তৃণমূলের প্রকৃত পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের হাত থেকে চলে যায় সুবিধাভোগীদের হাতে— যারা কালেভদ্রে এলাকায় যান, সংগঠনের কাজকর্মে তাদের পাওয়া দুষ্কর। এদেরই বিভিন্ন দলে বলা হয় ‘বসন্তের কোকিল’। মিলাদের সময় ইনারা থাকেন না, দেখা যায় ‘জিলাপি’ বিতরণের সময় হাজির। বিপুল-বিশাল জনসমর্থন থাকার পরও দলটি তাই দুর্বল, নীতি-আদর্শহীন ও লুটেরা সংস্কৃতির অনুসারী নেতৃত্বের কারণে জনগণ এবং জাতিরও স্বপ্নভঙ্গ করছে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় যাওয়ার পরই বিএনপিতে বড় ধরনের স্খলন শুরু হয়। বিচারপতি আবদুস সাত্তার, মির্জা গোলাম হাফিজ, মশিউর রহমান, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আবদুস সালাম তালুকদার, জেনারেল মাজেদুল হক, কর্নেল (অব.) মুস্তাফিজুর রহমান, শেখ রাজ্জাক আলী, আবদুর রহমান বিশ্বাস, শাহ আজিজুর রহমান, কে এম ওবায়দুর রহমানের মতো নেতার অনুপস্থিতি দলকে একেবারে কাবু করে ফেলে। আবদুল মান্নান ভূঁইয়া প্রায় একযুগ মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে দলের রাজনৈতিক চরিত্র ধরে রাখার লড়াই করেছেন। কিন্তু দলে ব্যক্তিবিশেষের উদ্যোগ নয়, প্রয়োজন সমষ্টির ভূমিকা। ব্যক্তি উদ্যোগে সমষ্টির সাড়া ছিল না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। শেষ শাসনকালের শেষ দিকে কাগুজে-নেতৃত্বের দলের ওপর নিয়ন্ত্রণ এতই শিথিল হয়ে যায় যে, স্থায়ী কমিটিতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেনরা থেকেও বিপর্যয় ঠেকাতে পারেননি। ওয়ান-ইলেভেন দলটিকে বিধ্বস্ত করে ফেলে। দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নেতাদের লুণ্ঠনপ্রিয়তার নেতিবাচক দিক কাজে লাগায় সেই পরিবর্তনের কুশীলবরা। দলকে পরিশুদ্ধ করে ঘুরে দাঁড়ানোর অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে দলের তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া রাজনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার সে প্রস্তাব যদি বিবেচনা করা হতো তা হলে বিএনপি বর্তমান করুণ দশায় পতিত হতো না বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা না করে নবম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিএনপি। তারপর হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া (হেফাজত এখন কার সঙ্গে), এবং ২০১৪ সালের জানুয়ারি-মার্চ তিন মাস অবরোধের নামে হঠকারী কর্মসূচি দলটির মেরুদণ্ডই অনেকটা ভেঙে দেয়। ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল থেকে নেতা-কর্মী-সমর্থক ও দেশবাসীকে নতুন আলোকিত প্রভাতের ইশারা দেবে দলটি এমন ধারণা ছিল কারও কারও। কিন্তু তাও হলো কই? কমিটি গঠন যত বিলম্বিত হচ্ছে ততই নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে জনমনে। বেগম জিয়া দলের সবাইকেই চেনেন এবং কে কী করতে পারেন তাও জানেন। সাধারণের মধ্যেও একটা ধারণা আছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে কারা যেতে পারেন, কারা হতে পারেন ভাইস চেয়ারম্যান। দলের কার্যকরী কমিটির নেতৃত্ব নিয়েও একটা ধারণা আছে। নেতা-কর্মী, সমর্থক ও উৎসাহী জনগণের ধারণার বাইরে অবিশ্বাস্য এবং মানানসই নয়— তেমন একটা কিছু করার চাপের মধ্যে আছেন কি বেগম জিয়া? মানুষ এখনো বিশ্বাস করে, বেগম খালেদা জিয়া একা সিদ্ধান্ত নিলে ভুল কম হতে পারে। আরও কিছু দিন তাকেই দলের মূল নেতৃত্বে থাকতে হবে। তার টাকার দরকার নেই, চামচারও দরকার নেই; দরকার পোড় খাওয়া কিছু রাজনৈতিক আদর্শবাদী নবীন-প্রবীণ লোক— যাদের তিনি চেনেন। মান্নান ভূঁইয়ার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন এখন দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। মান্নান ভূঁইয়া আর ফিরে আসবেন না। কিন্তু দলে এখনো তার নীরব অনুরাগীর সংখ্যা অনেক। প্রগতিশীল গণতন্ত্রীরাই এখনো বিএনপির প্রাণশক্তি। তারা অনেকটা নিষ্ক্রিয়। তবে সবাই কমিটেড। এ শক্তি ম্যাডামের এবং বিএনপির কাজে লাগবে। টোকাই বা আয়া-বুয়া মার্কাদের দিয়ে দল হয় না।

বিএনপির সমালোচনা করলে জামায়াতের ‘গা-জ্বলার’ কথা উল্লেখ করেছি আগে। আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যক্তি। আমার লেখায় নির্মোহভাবে আমি লীগ-বিএনপি দুই দলেরই মাঝে মাঝে সমালোচনা করি। বিএনপির সমালোচনার ব্যাপারে দারুণ রি-অ্যাক্ট করেছে জামায়াতের এক ব্যক্তি। মিনার রশীদ নামে তিনি দৈনিক নয়াদিগন্তে গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে একটি লেখা লিখেছেন— ‘বংশতন্ত্র কতটুকু খারাপ, কতটা অপরিহার্য’ শিরোনামে। মূল আক্রমণটা আমার ওপর দিয়েই গেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব পরের কোনো লেখায়। লেখার মূল কথা, আমি বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার পরামর্শ দিচ্ছি, জিয়ার ভাইকে নিয়ে আলাদা বিএনপি করছি, আমি সরকারের ‘মাইডিয়ার গ্রুপের’ লোক ইত্যাদি। আমি এত বড় রাজনৈতিক পালোয়ান হয়ে গেলাম! এ ব্যাপারে জোরালো জবাব আছে। কিন্তু বন্ধুরা আশঙ্কার কথা যেটি বললেন, নামটি লেখকের ছদ্মনাম। তিনি জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। পত্রিকাটির মাধ্যমে তাদের দলের ক্যাডারদের কাছে সাংকেতিক বার্তা পাঠান। এই লেখার মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধেও কি কোনো বার্তা দেওয়া হলো? কী সে বার্তা? তারপর থেকে অপরিচিত ব্যক্তিরা আমার খোঁজখবর নিচ্ছে বলে বাসার দারোয়ান জানিয়েছে।  একজনের সঙ্গে দেখা না করে অন্যায় আচরণই করেছি। ভদ্রলোক কষ্ট পেয়েছেন।  আশা করি তিনি পরিস্থিতিটা বুঝবেন।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর