মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব

মাওলানা আবদুর রশিদ

মুসলমানরা একে অন্যের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও পরিচয়পর্বে পরস্পরের কল্যাণ কামনা করে যে সম্ভাষণ ব্যবহার করে তাকেই সালাম বলে। তাফসিরে বাহরে মুহিতে উল্লেখ আছে, প্রথমে সালাম দেওয়া অধিকাংশ ওলামায়ে কিরামের মতে সুন্নতে মুয়াক্কাদা। হজরত হাসান বসরি (রহ.) এ ব্যাপারে বলেন, ‘প্রথমে সালাম দেওয়া মুস্তাহাব অর্থাৎ দেওয়া না দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা আছে। কিন্তু সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। (মাআরিফুল কোরআন-২)

সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ছেড়ে দিলে গুনা হয়। সে মতে সালাম না দেওয়ায় অভ্যস্ত ব্যক্তির গুনা হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে হরেক রঙের সুউচ্চ প্রাসাদ রয়েছে যেগুলোর অভ্যন্তরভাগ থেকে বহির্ভাগ এবং বহির্ভাগ থেকে অভ্যন্তরভাগ দৃষ্টিগোচর হয়। আর এমন সব নিয়ামতের দ্বারা তা পরিপূর্ণ যেগুলো কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি, এমনকি কোনো হৃদয়ের কল্পনাও সে পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রসুলুল্লাহ! এত সব নিয়ামতে ভরপুর প্রাসাদ কার জন্য? বললেন, সেই ব্যক্তির জন্য যে সালামের প্রচলন ঘটিয়েছে; অনাহারীকে আহার দান করেছে, রোজা রেখেছে ও মানুষ নিদ্রামগ্ন থাকার সময় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েছে।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাম দেওয়ার আগে কথা বলে তার সালামের উত্তর দেবে না। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, অভিশপ্ত ইবলিশ মুমিন ব্যক্তি সালাম দেওয়ার সময় কেঁদে কেঁদে বলে, হায়! এরা তো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে যাবে।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে  বর্ণিত : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ কোনো সভায় পৌঁছে সে যেন সভার লোকদের সালাম দেয় এবং বসতে চাইলে বসে যায়। আর যখন সেখান থেকে প্রস্থানের ইচ্ছা করে তখনো যেন তাদের সালাম দেয়। কেননা প্রথম সালাম শেষ সালাম অপেক্ষা উত্তম নয়। (তিরমিজি)।

সভা থেকে প্রস্থানের সময় সালাম দেওয়ার অর্থ হচ্ছে বিদায় নেওয়ার সময় সালাম দেওয়া চাই, সেখানে বসা হোক কিংবা না হোক। আর উভয় সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। তবে কতক বিদগ্ধ আলেম বিদায়ি সালাম ও তার জবাবকে মুস্তাহাব বলেছেন। (মিরকাত : খ-৯ পৃ. ৬৩/মাজাহেরে হক জাদিদ-৪)।

     লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর