মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

দূষণের ঘেরাটোপ

রাজধানীকে বসবাসযোগ্য করে তুলুন

পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ আর পরিবেশদূষণের ঘেরাটোপে আটকা পড়েছে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। রাজধানী ঢাকা দুনিয়ার অন্যতম মেগা সিটি হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও সে পরিচিতিকে কলঙ্কে ঢেকে ফেলেছে পরিবেশদূষণের ঘটনা। পুরো রাজধানীই যেন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবাসিক এলাকার ঘন-ঘিঞ্জি বসতির মধ্যেই গড়ে উঠছে পরিবেশদূষণকারী কলকারখানা। রাজধানীর খাল-বিল, ডোবা-নালা-জলাশয় সব ভরাট হয়ে যাচ্ছে। থেমে নেই মাটিদূষণ। ধূলিকণা এবং কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া বাতাসে মিশে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি করছে। পরিবেশদূষণের কারণে বায়ুবাহিত, পানিবাহিত, ছোঁয়াচে রোগের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে দেড় কোটি মানুষের মেগা সিটি। রাজধানী দিন দিন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, অন্যান্য মহানগরীর অবস্থাও প্রায় অভিন্ন। বৃক্ষ উজাড়, জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশদূষণের ব্যাপকতা। মানুষের জীবন হচ্ছে বিপন্ন। বিপন্ন হচ্ছে পশু-পাখিসহ নানা শ্রেণির প্রাণিকুল। পরিবেশদূষণে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ভূমিকা রাখছে। শুধু রাজধানীর আশপাশে রাজউকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গড়ে উঠেছে প্রায় আড়াইশ ইটভাটা। আইন অমান্য করেই সেসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে চলছে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার। শব্দদূষণ রাজধানীবাসীর মানসিক স্বাস্থ্যে প্রতিনিয়ত আঘাত হানছে। উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে রক্তচাপ, মাথাব্যথা, বদহজম, পেপটিক আলসার, কানে কম শোনা, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে তারা আক্রান্ত হচ্ছে। দূষণের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় এসব দেখভালের জন্য যাদের পোষা হয়, তারা নিজেদের পকেট ভরাকেই কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। দূষণকারীদের প্রতিহত করার বদলে তাদের সেবাদাস হিসেবেই নিজেদের ব্যবহার করছে। রাজধানীর দেড় কোটি মানষের জন্য স্বস্তিদায়ক অবস্থা সৃষ্টি করতে দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই শুরুর উদ্যোগ নিতে হবে। দূষণকারী যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

সর্বশেষ খবর