শনিবার, ৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বপ্নবিলাসী মেগা বাজেট

যথাযথ বাস্তবায়নই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্নকে সামনে রেখে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার মেগা বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা। বাজেটে আয় ও ব্যয়ের ঘাটতি ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্নকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন ক্ষমতায় আসার পর, তার বাস্তবায়নে নতুন বাজেটে অন্তত দশটি মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আকাশছোঁয়া ব্যয়ের এই উচ্চাভিলাষী বাজেট জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখালেও সে স্বপ্ন পূরণ অনেকাংশেই সঠিকভাবে বাজেট বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করছে। সন্দেহ নেই প্রস্তাবিত বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে স্থিতি লাভের কৃতিত্ব দেখাবে। মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে জাতি আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। তবে কঠিন বাস্তবতা হলো, সাধ ও সাধ্যের বৈপরীত্য ঠেকাতে অর্থমন্ত্রী তথা সরকারকে অর্থবছরের সারাক্ষণই প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকার ঘাটতির বোঝা চাপানো হয়েছে জাতির ঘাড়ে। এ ঘাটতি পূরণেও সরকারকে সর্বক্ষণ তটস্থ থাকতে হবে। বাজেটে যে সম্ভাব্য রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছে তা এতটাই উচ্চাভিলাষী যে, সেখানেও দেখা দিতে পারে সমস্যা। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায়ের আকাঙ্ক্ষা পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী এনবিআরের ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তা তারা কতটা রক্ষা করতে পারবেন তা এখন দেখার বিষয়। বাজেটে এডিপি বাস্তবায়নে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশাল বাজেটের এ অংশটুকুই সাধারণ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয়। দক্ষ এবং সক্ষম সৎ প্রশাসনের অভাবে উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের নামে এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বের অনুশীলন চলে এদেশে। বাজেটের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে লুটেরাদের সামাল দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।  সেটিই বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর