বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

শ্রম বাজার উন্মোচন

প্রধানমন্ত্রীর সৌদি সফরের সুফল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলপ্রসূ সফর সৌদি আরবে দীর্ঘ নয় বছর ধরে বাংলাদেশের বন্ধ শ্রম বাজারের দরজা উন্মোচনের আশাবাদ সৃষ্টি করেছে। সফরকালে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ জনশক্তি নেওয়ার কথা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়েছে। দক্ষ জনশক্তির বিষয়ে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে বিশেষ আগ্রহ। আশা করা হচ্ছে সৌদি শ্রমবাজার উন্মোচিত হলে সুযোগ পাবেন বিপুলসংখ্যক অদক্ষ শ্রমিকও। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে একটি কাঠামো তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল এজেন্ডাগুলোর মধ্যে ছিল বিনিয়োগ ও শ্রমবাজার। সৌদি সামরিক জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পাল্টে দিয়েছে দুই দেশের সহযোগিতার চিত্র। সৌদি জোটে বাংলাদেশকে কাছে পেয়ে শ্রমবাজার, বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সব ইস্যুতেই ইতিবাচক আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি সরকার; যার প্রতিফলন দেখা গেছে বাদশাহ সালমানের সঙ্গে বৈঠকে। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি শ্রমমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পাঁচ লাখ শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রশংসা করে সৌদি শ্রমমন্ত্রী বলেছেন, ৪২ হাজার নারীসহ যে ১২ লাখের বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরবে কাজ করছেন, তাদের প্রায় সবার কাজই প্রশংসার যোগ্য। নিয়োগকর্তাদের কাছেও তাদের বেশ সুনাম আছে। সৌদি আরব আরও ৫ লাখ কর্মী নেওয়ার যে প্রস্তাবনা দিয়েছে তার তাত্পর্যপূর্ণ দিক হলো সাধারণ শ্রমিকের পাশাপাশি চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও শিক্ষক নেওয়ার আগ্রহ। এর ফলে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। স্মর্তব্য, ২০০৮ সালে শ্রমিক নিয়োগের ভিসা বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। এর আগে ১৯৭৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৩ জন বাংলাদেশি গিয়েছেন সৌদি আরবে। শেষের দিকে প্রতি বছর দেড় থেকে দুই লাখ কর্মী সে দেশে নিয়োগ পেয়েছে। কিন্তু মহল বিশেষের অপপ্রচার ও কিছু বাংলাদেশির অপরাধপ্রবণতার কারণে বাংলাদেশিদের নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেয় রিয়াদ। ফলে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি অর্ধেকে নেমে আসে। সৌদিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্মোচিত হলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতেও এর সুফল অনুভূত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর