বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

চলমান সাঁড়াশি অভিযান

অকারণ হয়রানি কাম্য নয়

একের পর এক টার্গেট কিলিংয়ের পর দেশজুড়ে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। এ অভিযানে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে জঙ্গির সংখ্যা ১৪৫ জন এবং অন্যরা সন্দেহভাজন। যাদের অধিকাংশই জামায়াত ও বিএনপির কর্মী বলে মনে করা হচ্ছে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। একের পর এক টার্গেট কিলিংয়ের পর সরকার খুনিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সক্রিয় হবে এমনটিই স্বাভাবিক। তবে টার্গেট কিলিংয়ের হোতাদের ধরতে গিয়ে মাত্র চার-পাঁচ দিনে প্রায় ১২ হাজার লোককে গ্রেফতারের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে গ্রেফতার বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ এখন ওপেন সিক্রেট বলেও বিবেচিত। বিষয়টি যে সরকারের সর্বোচ্চ মহলেরও নজরে এসেছে তা অনুমিত হয় সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, অভিযানকালে অযথা কাউকে হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন অভিযান চলবে, তবে দেশের কোনো মানুষকে যেন অযথা হয়রানি বা গ্রেফতার না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্মর্তব্য, বিগত ৯ জুন মধ্যরাত থেকে শুরু হয় দেশব্যাপী গ্রেফতার অভিযান। দুর্বৃত্তদের টার্গেট কিলিং বন্ধে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ইউনিট। টার্গেট কিলার এবং তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে তত্পর হয়ে উঠেছে গোয়েন্দারা। সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের কুপিয়ে হত্যা এবং আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট থেকে আইএসের নামে দায় স্বীকার করার ঘটনার নেপথ্যে যে সহিংস সাম্প্রদায়িক রাজনীতি জড়িত সে বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অনেকটাই নিশ্চিত। কিন্তু টার্গেট কিলাররা কোথা থেকে এসে কিলিং শেষে আবার কোথায় অদৃশ্য হয়ে নিজেদের লুকিয়ে রাখছে প্রকৃত কিলারদের চিহ্নিত করে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা। ২০১৩ সাল থেকে চলছে একের পর এক টার্গেট কিলিং। তিন বছরে ৪৯টি কথিত জঙ্গি হামলায় ৫২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আশা করব খুনিদের আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধ্যে সবটুকু প্রয়োগ করবে। তবে সংশ্লিষ্ট অভিযানে সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর