শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

রমজানে দ্বীনি বিষয়ে যত্নবান হতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বীনের ব্যাপারে সূক্ষ্ম আত্মমর্যাদাবোধের অধিকারী ছিলেন। আল্লাহর নির্দেশিত বিধানের সামান্য বিচ্যুতিও তার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতো না। আমাদের যাপিত জীবনেও সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে হবে। কোনো ক্ষেত্রেই যাতে সীমা লঙ্ঘিত না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। মাহে রমজানে আমরা এ শিক্ষা আরও বেশি করে নিতে পারি। সর্বক্ষেত্রে দ্বীনি বিধান প্রতিষ্ঠায় মাহে রমজান হোক আমাদের সাধনার মাস। সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে তার কাছে নিজেদের সমর্পিত করার মাস।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কখনো দুটি কাজের মধ্যে কোনো একটি গ্রহণ করার এখতিয়ার দেওয়া হলে, যদি তা গোনাহের পর্যায়ে না পড়ত তবে তিনি সহজতর কাজটি বেছে নিতেন। যদি তা গোনাহর পর্যায়ে পড়ত তবে তিনি তা থেকে সবার চেয়ে বেশি দূরে থাকতেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কিন্তু আল্লাহর নির্ধারিত হুরমাত (সীমা) লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে তিনি মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন (আদাবুল মুফরাদ)।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে হাজির হলেন। আমরা তখন তাকদির সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত ছিলাম। এতে তিনি এতটা অসন্তুষ্ট হলেন যে, তার চেহারা লাল হয়ে গেল। যেন তার দুই গালে ডালিমের রস নিংড়ে দেওয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন, এ কাজ করার জন্য কি তোমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অথবা এ উদ্দেশ্যে কি আমি প্রেরিত হয়েছি? এ বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়েই তোমাদের পূর্বেকার লোকরা ধ্বংস হয়েছে। আমি তোমাদের শপথ করে বলছি, সাবধান! এ বিষয় নিয়ে তোমরা আর কখনো বিতর্কে লিপ্ত হবে না। (তিরমিজি)

হজরত আবুজর গিফারী (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে ‘রসুলে করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন’— আমার উন্মত যতদিন ইফতার ত্বরান্বিত করবে এবং সাহরি বিলম্বিত করবে ততদিনে তারা কল্যাণকর হয়ে থাকবে।’ সূর্যাস্তের মুহূর্তে ইফতার করার সময়। এ মুহূর্ত উপস্থিত হওয়া মাত্রই রোজা খুলে ফেলা কর্তব্য। ইফতার করতে অকারণ বিলম্ব হওয়া উচিত নয়।

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত— হাদিসে বলা হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল লোকের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যেও এক ব্যক্তি হলুদ রংয়ের সুগন্ধি মেখেছিল। তিনি লোকদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন, তাদের সালাম দিলেন, কিন্তু ওই ব্যক্তিকে উপেক্ষা করলেন। এ উপেক্ষার কারণ ওই ব্যক্তি যে সুগন্ধি ব্যবহার করেছিল তা ধর্মীয় বিধানে অনুমোদনযোগ্য নয়। জীবনের সর্বক্ষেত্রে দ্বীনি বিধান প্রতিষ্ঠায় রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতকে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সর্বক্ষেত্রে দ্বীনি বিধান প্রতিষ্ঠার তওফিক দান করুন।  আমিন।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর