মাদারীপুরে এক কলেজশিক্ষককে হত্যার চেষ্টা চালাতে গিয়ে তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে তিন ঘাতকের একজন ধরা পড়েছে। আটক ঘাতক একজন শিবিরকর্মী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে সে মাদারীপুরে গিয়েছিল কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করতে। খুনিদের টার্গেট ছিলেন মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী। কলেজের কাছেই এক বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই শিক্ষক। গত বুধবার বিকাল ৪টার দিকে তিন দুর্বৃত্ত তার বাসার কলিংবেল টিপে। কলেজশিক্ষক রিপন দরজা খুলে দিতেই দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। এ সময় শিক্ষকের আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। দুুই দুর্বৃত্ত তাতে সফল হলেও ধরা পড়ে একজন। তার পকেটে জামায়াত-শিবির পরিচালিত একটি সুপরিচিত কোচিং সেন্টারের চাবি ছিল। গোলাম ফয়জুল্লাহ ফাহিম (২০) নামের আটক দুর্বৃত্ত ঢাকার উত্তরার একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। গত তিন বছরে অর্ধশতাধিক টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। হাতেনাতে খুনির ধরা পড়ার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। টার্গেট কিলিংয়ে কারা জড়িত, তাদের নেপথ্যের শক্তি কারা তা উদঘাটনে আটক দুর্বৃত্তদের কাছে তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ ও যথাযথ তদন্ত চালালে তা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী চক্রের চেহারা উন্মোচনে ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা আশা করব আটক দুর্বৃত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দুই সহযোগীর নাম ও পরিচয় উদঘাটন করা হবে। অন্যান্য কিলিং হত্যার ব্যাপারেও সংগ্রহ করা হবে তথ্য-উপাত্ত। দেশকে জঙ্গিবাদের হুমকিমুক্ত রাখার স্বার্থেই জঙ্গিবাদের হোতাদের পরিচয় জানা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্য। ছায়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। তা কাটিয়ে ওঠার সব সুযোগ গ্রহণ করা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি এ জাতির মূল্যবান উপাদান। দুর্বৃত্তরা সে ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে নমনীয় হওয়ার কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়।