শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

জালনোটের দৌরাত্ম্য

অপরাধ দমনে চাই আরও কড়া আইন

ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু রাজধানী নয়, দেশজুড়েই চলছে তাদের অপতত্পরতা। দেশের অর্থনীতির জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পরও জালনোট চক্রের সদস্যদের সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারের পরও তারা কীভাবে পার পায় তাও একটি বড় মাপের প্রশ্ন। আইনের ফাঁক দিয়ে এ অপরাধের সঙ্গে যুক্তরা বারবার গ্রেফতারের পরও বেরিয়ে আসছে। আবারও তারা নিয়োজিত হচ্ছে জালনোটের ব্যবসায়। বারবার গ্রেফতার হওয়া জালিয়াতের সংখ্যাও কম নয়। জালনোট চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। কিন্তু মামলার দুর্বলতায় জালিয়াতরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ এ ব্যাপারে যাদের সাক্ষী করে প্রায়শই তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। ফলে মামলার নিষ্পত্তি অসম্ভব হয়ে পড়ে। জাল টাকা ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কারণে তাদের জামিন দেওয়ার জন্য আইনি তত্পরতা চালাতে আইনজীবীদের কেউ কেউ মুখিয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে তারা জামিন পান আইনের ফাঁক গলিয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি জাল করা হয় ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, ২০১৫ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০১৬ সালের ৬ জুন পর্যন্ত ১ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকার জালনোট ধরা পড়েছে। এ সময়ে মোট ১১১টি কেস জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১০০ টাকার নোট ১ হাজার ১৩২টি, ৫০০ টাকার নোট ৩ হাজার ৫৫২টি ও ১০০০ টাকার নোট রয়েছে ১৪ হাজার ২৪২টি। সব মিলিয়ে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার মোট জালনোট ধরা পড়েছে ১৮ হাজার ৯২৬টি। স্মর্তব্য, জালনোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল।  ১৯৮৭ সালে তা রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়। মৃত্যুদণ্ডের পুনঃপ্রবর্তন না হোক, এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জামিন অযোগ্য করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও আর্থিক জরিমানা সংবলিত নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে, আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর