মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোজায় প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়

মাওলানা মাহমূদুল হাসান

রোজার উপকারিতা সম্পর্কে হজরত থানভী (রহ.) বলেছেন, প্রকৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে সুস্পষ্ট প্রতিভাত হয়; মানুষের প্রবৃত্তির ওপর আকলের পরিপূর্ণ আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ থাকা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় মানবীয় দুর্বলতার কারণে প্রবৃত্তি মানুষের আকলের ওপর প্রবল হয়ে ওঠে এবং বোধশক্তি কাবু করে ফেলে। এ কারণেই প্রবৃত্তির পরিশুদ্ধির লক্ষ্যে আল্লাহ রোজাকে মানুষের জন্য মৌলিক বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তাই যারা রোজা পালন করে, তাদের ভাগ্যে নিম্নোক্ত উপকারিতা লাভ হয় : ১. রোজা দ্বারা প্রবৃত্তির ওপর আকলের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। ২. রোজা দ্বারা মানুষের অন্তরে আল্লাহর ভয়ভীতি ও তাকওয়ার গুণ সৃষ্টি হয়। ৩. রোজা দ্বারা মানুষের স্বভাবে নম্রতা, বিনয়, শিষ্টাচার ও মিনতি সৃষ্টি হয় এবং আল্লাহর মহত্ত্ব ও কুদরতের অনুভূতি জাগে। ৪. রোজা দ্বারা অন্তর্দৃষ্টি উন্মোচিত হয়। ৫. রোজা দ্বারা মানুষের মধ্যে দূরদর্শিতা জন্ম হয়। ৬. রোজা দ্বারা মানুষের মধ্যে এক প্রকার রুহানি শক্তি সৃষ্টি হয়, যার দ্বারা মানুষ সব সৃষ্ট বস্তুর গভীর তত্ত্ব উপলব্ধি করতে সমর্থ হয়। ৭. রোজা বরকতে মানুষ অসভ্যতা ও পশুত্বের স্বভাব থেকে মুক্তিলাভ করতে পারে। ৮. রোজার বরকতে ফেরেশতাদের নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভ হয়। ৯. রোজার কারণে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ হয়। ১০. রোজার বরকতে মানুষের ভিতর ভ্রাতৃত্ববোধ, সহনশীলতা, মায়া-মমতা ও ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। কেননা যে কোনো দিন ক্ষুধার্ত বা পিপাসার্ত হয়নি, সে কী করে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত ব্যক্তির অবস্থা উপলব্ধি করতে পারবে? সে কেমন করে রিজিকদাতার নিয়ামতের প্রকৃত শুকরিয়া আদায় করতে সক্ষম হবে? হতে পারে এমন ব্যক্তি মুখে মুখে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুধা আর পিপাসার যন্ত্রণা না দেখা দেয় এবং শরীরের শিরা-উপশিরায় দুর্বলতা প্রকাশ না পায় ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ আল্লাহর নিয়ামতের উপযুক্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে না। প্রেমাস্পদ কিছু দিন দূরে থাকলেই তার গুরুত্ব অনুধাবন করা সহজ হয়।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর