বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

কারাগারের চালচিত্র

বন্দীদের মানবাধিকার নিশ্চিত করুন

অপরাধীরাও মানুষ। তাদের কারাগারে রাখা হয় অপরাধের সাজা হিসেবে। উদ্দেশ্য থাকে সাজা ভোগকালে নিজেদের তারা সুধরে নেবেন। অন্ধকারের পথ থেকে আলোর পথে যাওয়ার মানসিকতা অর্জন করবেন। কারা কর্তৃপক্ষের বাহারি স্লোগান- রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ। কিন্তু এই মহত্তম স্লোগানের কোনো প্রতিফলনই নেই কারাগারে। কারাগারে বন্দীদের আলোর পথ দেখানোর যে আয়োজন তাতে বাদ সাধছে কারা অব্যবস্থাপনার অন্ধকার। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে হাজতি আসামিরা নানা রোগে ভুগছেন। এমনকি তারা পাচ্ছেন না পরিমাণ মতো খাবারও। বন্দীদের পুষ্টিকর খাবার এবং তাদের জন্য পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করার জন্য সম্প্রতি সুপারিশ করে এক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী মাসুদ সেখ। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আদালতে হাজিরার জন্য হাজতি আসামিদের কারাগার থেকে বের করা হয় ভোর ৫টায়। এ সময় ৪০ থেকে ৫০ গ্রামের শুকনা চিঁড়া এবং ১০-১২ গ্রামের আখের গুড় তাদের সকালের নাস্তা হিসেবে দেওয়া হয়। চিঁড়ার সঙ্গে কোনো পানিও দেওয়া হয় না। খাবারও থাকে অনিশ্চিত। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় আদালত থেকে কয়েদিদের নিয়ে বিকাল ৫টা থেকে ৫টা ৩০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে বা গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে গাড়ি রওনা দেয়। অথচ কারাগারগুলোতে বিকাল ৫টা থেকে ৫টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কয়েদিদের রাতের খাবার সরবরাহ করা হয়। সে ক্ষেত্রে আদালতে হাজিরা দিতে যেসব কয়েদি আসেন তাদের রাতের খাবার কারাগার থেকে দেওয়া হয় না। কারণ তারা কারাগারে পৌঁছানোর আগেই খাবার বিতরণ শেষ হয়। সে ক্ষেত্রে কয়েদিদের আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় খাবার সরবরাহের ওপর নির্ভর করতে হয়। কারাবন্দীদের উপযুক্ত পানীয়, খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য পরিসেবা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, কারাগারে থাকা কয়েদিরা প্রায়ই চুলকানি জাতীয় চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, শারীরিক দুর্বলতা, পুষ্টিহীনতা ও মনোবিকৃতিতে ভোগেন। দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণের বেশি বন্দী রয়েছে। তাদের মানবাধিকার রক্ষায় সরকার আরও যত্নবান হবে এটি একটি প্রত্যাশিত বিষয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর