বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইয়াবা আগ্রাসন

প্রতিরোধে চাই সমন্বিত পদক্ষেপ

প্রভাবশালীদের স্বজনদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে মাদক ব্যবসা। মাদক পাচার এমনকি তৈরির সঙ্গেও যুক্ত তারা। ইয়াবা আগ্রাসন দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে। এ মাদক নেশার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে সমাজের প্রায় সব স্তরের মানুষ। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধের এক বড় অংশের সঙ্গে ইয়াবা উন্মাদনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ইয়াবাসহ মাদকের থাবা প্রতিহত করতে সরকারি উদ্যোগের দৃশ্যত অভাব নেই। বিজেবি, র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক দৃষ্টি থাকে মাদক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আলাদা দফতরও। তারপরও এর আগ্রাসন কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সম্পর্ক থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও রয়েছে মাদক ব্যবসার সম্পর্ক। রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা এমনকি আরও উচ্চপর্যায়ে বিতরণ করা হয় মাদক ব্যবসার বখরা। আশির দশকে এদেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। ওই দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের পরিচালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। নব্বই দশকের শেষদিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদকরাজ্যে। প্রথমদিকে এ আগ্রাসনকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। তরুণীদের কেউ কেউ দেহপসারিণী হয়ে জোগাচ্ছে মাদক কেনার অর্থ। সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক গ্রহণের প্রবণতাও বাড়ছে দ্রুতহারে। একই সিরিঞ্জে বিভিন্নজনের মাদক গ্রহণে এইচআইভি এইডস এবং বি-হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়ার বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বলে বিবেচিত ইয়াবা। এ মাদক নেশায় তাত্ক্ষণিকভাবে হৃত্স্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। এভাবেই হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইয়াবা আসক্তরা। এ মরণনেশা প্রতিরোধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর