সোমবার, ২৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

জ্বালানি নিরাপত্তা

গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ নিন

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৯ সালের পর দেশে গ্যাস সংকট থাকবে না। পরবর্তী ৫০ বছর দেশ এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে যে উদ্যোক্তারা যে পরিমাণ গ্যাস চাইবেন সে পরিমাণ সরবরাহ সম্ভব হবে। জ্বালানি সংকটে যখন হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে তখন অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্য আশাব্যঞ্জক। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে হারে গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে তাতে বর্তমান মজুদ গ্যাস দিয়ে বড়জোর আর এক যুগ চলা যাবে। সান্ত্বনা এতটুকু বড় ধরনের মজুদ না থাকলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পকেট গ্যাস। যা দিয়ে আরও কয়েক বছর চলা সম্ভব হবে। সাগর প্রান্তেও বড় ধরনের মজুদ আবিষ্কৃত হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা। দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৬টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে, যার মধ্যে ২০টি থেকে তোলা হচ্ছে এ মূল্যবান প্রাকৃতিক জ্বালানি। স্বাধীনতার পর থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তোলিত গ্যাসের পরিমাণ ১৩ দশমিক ৪৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। মজুদ ২৭ দশমিক ১২ ট্রিলিয়ন গ্যাসের মধ্যে ১৩ দশমিক ৬৪ টিসিএফ উত্তোলনযোগ্য। প্রতিবছর ৮০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস খরচ হচ্ছে। এ হারে চলতে থাকলে ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে গ্যাসের মজুদ শেষ হয়ে যাবে। তবে এ হতাশাজনক অবস্থায় আশা হয়ে দেখা দিয়েছে সমুদ্র ও স্থলভাগে বড় দুটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া। গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসায় জ্বালানি নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিদেশ থেকে এলএনজি ও সিএনজি গ্যাস আমদানির নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত গ্যাসে ঘাটতি পড়লে আমদানিকৃত গ্যাসের মাধ্যমে যাতে চাহিদা পূরণ করা যায় সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আজকের যুগ হলো প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিগত সুবিধার জন্য জ্বালানির ওপর মানুষ আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এ বাস্তবতাকে মনে রেখে সাগরপ্রান্তের গ্যাস অনুসন্ধানের পাশাপাশি স্থলভাগের পকেটগুলো থেকে কীভাবে গ্যাস উত্তোলন করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। বিদেশ থেকে এলএনজি ও সিএনজি গ্যাস আমদানির নেটওয়ার্ক যাতে দ্রুত গড়ে তোলা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।  শুধু ৫০ বছর নয়, আরও দীর্ঘ মেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তার জন্যও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর