সোমবার, ২৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মীর জাফর

পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পরাজয় ঘটলে ইংরেজদের সাহায্য করার জন্য মীর জাফর পুরস্কারস্বরূপ বাংলার মসনদ লাভ করলেন। এ মসনদ লাভের জন্য তিনি ইংরেজ কোম্পানিকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মসনদে আরোহণ করে তিনি মুর্শিদাবাদের রাজকোষে সেই পরিমাণ অর্থ পেলেন না। তখন ইংরেজদের খুশি করার জন্য আসবাবপত্র, মূল্যবান ধাতুনির্মিত বাসনপত্র বিক্রি করে প্রতিশ্রুত দেড় কোটি টাকার অধিক ইংরেজ কোম্পানিকে দিতে এবং রাজদরবারের একজন ইংরেজ রেসিডেন্ট থাকার অনুমতি দান করতে বাধ্য হলেন।

কোম্পানির প্রাপ্য টাকা মিটাতে গিয়ে মীর জাফর দেউলিয়া হয়ে পড়েন।  এদিকে ঢাকা ও পূর্ণিমায় বিদ্রোহ দেখা দিলে তিনি গত্যন্তর না দেখে ক্লাইভের সাহায্য প্রার্থনা করলেন। ক্লাইভের সাহায্যে ঢাকার বিদ্রোহ দমন করা হলেও পূর্ণিমায় বিদ্রোহ দমন করার সময় মীর জাফরের সেনাবাহিনী তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে পূর্ণিমার দিকে অগ্রসর হতে অস্বীকৃতি জানায়। মীর জাফর বাধ্য হয়ে এবারও ইংরেজদের সাহায্য গ্রহণ করলেন। পূর্ণিমার বিদ্রোহ দমন করে ক্লাইভ কোম্পানির প্রাপ্য টাকা মীর জাফরের কাছ থেকে আদায় করে নিলেন। ফলে মীর জাফরের আর্থিক দুরবস্থা চরমে উঠল। ইত্যবসরে ক্লাইভ বাংলায় কোম্পানির গভর্নর নিযুক্ত হলেন এবং নবাবের শাসনব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করলেন। মীর জাফরের মতো হীনচরিত্র ব্যক্তির পক্ষেও ইংরেজদের ঔদ্ধত্য সহ্য করা সম্ভব হলো না। তাদের কাছ থেকে বারবার সাহায্য গ্রহণ করায় তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি এতদূর বেড়ে গিয়েছিল যে, মীর জাফর নবাব হয়েও নবাবের প্রকৃত ক্ষমতা ভোগ করতে পারলেন না। তিনি তাদের কাজে অতিষ্ঠ হয়ে ইংরেজদের বঙ্গদেশ থেকে বিতাড়িত করার জন্য ওলন্দাজের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।  চুঁচুড়ার ওলন্দাজ বাটাভিয়া হতে সাহায্যের উদ্দেশ্যে সাতটি যুদ্ধজাহাজ আনালেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর