মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধনীদের জন্য জাকাত ফরজ

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

ইসলামে প্রতিটি অবস্থাপন্ন মুমিনের জন্য জাকাত আদায় একটি অবশ্য কর্তব্য বা ফরজ বলে বিবেচিত। জাকাত ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। জাকাত আদায় যাদের জন্য ফরজ তারা তা আদায় না করলে পরকালে তাদের কঠিন সাজার সম্মুখীন হতে হবে। পবিত্র কোরআনে সালাত বা নামাজ আদায়ের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জাকাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে। অবস্থাপন্ন মুমিনদের জন্য জাকাত আদায় যে বাধ্যতামূলক তা বুঝাতে যাকাতের কথা বার বার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ বা সঞ্চয় থাকলে জাকাত আদায় বাধ্যতামূলক। সাধারণত দরিদ্র আত্মীয় স্বজন, দুস্থজন জাকাতের প্রধান দাবিদার। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে জাকাতের প্রাপক হিসেবে আরেক বিশেষ শ্রেণির দাবিদারের কথা বলেছেন। সূরা বাকারার ২৭৩নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ইহা প্রাপ্য অভাবগ্রস্ত লোকদের, যাহারা আল্লাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে দেশময় ঘোরাফেরা করিতে পারে না; যাচ্ঞা না করার জন্য অজ্ঞ লোকেরা তাহাদেরকে অভাবমুক্ত বলিয়া মনে করে, তুমি তাহাদের লক্ষণ দেখিয়া চিনিতে পারিবে। তাহারা মানুষের কাছে নাছোড় হইয়া যাচ্ঞা করে না। যে ধনসম্পদ তোমরা ব্যয় কর আল্লাহ তাহা সবিশেষ অবহিত।’ অনেক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি বা পরিবার আছে যারা সামাজিক মান মর্যাদার কারণে সাহায্যপ্রার্থী হতে পারে না কিংবা তারা সাহায্য চাইতে সংকোচে ভোগে, অথচ তাদের দেখলে বোঝা যায় তারা দৈন্যদশায় আছে এবং তাদের সাহায্যের প্রয়োজন। জাকাত আদায়ের সময় তাদের প্রতি নজর দেওয়া উচিত। ইসলামে শুধু জাকাত আদায় নয়, মুমিনদের দিকে তাদের গরিব ভাইদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কৃপণ ও দান-খয়রাতকারী দুই ব্যক্তি এমন দুই ব্যক্তির সঙ্গে তুলনীয়, যাদের পরিধানে রয়েছে লৌহবর্ম। তাদের উভয়ের হাত-বুক ও কণ্ঠনালির মাঝখানে আটকে আছে। দান-খয়রাতকারী ব্যক্তি যখনই দান-খয়রাত করে তখনই তার লৌহবর্ম প্রশস্ত হয়ে যায়। আর কৃপণ যখনই দান-খয়রাত করার ইচ্ছা করে তখনই তার লৌহবর্ম আরও সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং এর প্রতিটি বৃত্ত স্ব-স্ব স্থানে অনড় হয়ে থাকে। (মুসলিম)

লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর