বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

পোশাক শিল্পের জন্য চ্যালেঞ্জ

সরকার ও উদ্যোক্তাদের সক্রিয় হতে হবে

দেশের তৈরি পোশাক শিল্প হঠাৎ করেই দুই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সে দেশে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বাজার ধরে রাখা যাবে কিনা তা ইতিমধ্যে বড় মাপের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরো এবং ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দাম হ্রাস পাওয়ায় যুক্তরাজ্য পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ন্যায্যমূল্য পাওয়ার বিষয়টিও সংশয়ের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশ যে জিএসপি সুবিধা পেয়েছে যুক্তরাজ্যে তা দেওয়া হবে কিনা সেটিও একটি বড় মাপের প্রশ্ন। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার। প্রতি বছর বাংলাদেশ সে দেশে ৩২০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে, এর সিংহভাগই তৈরি পোশাক। যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করায় সে দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য নতুন করে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে হবে। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ নিয়ে উৎকণ্ঠার পাশাপাশি ভারতের দিক থেকেও সৃষ্টি হয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ। তৈরি পোশাক শিল্পে এক সময় ভারত ছিল শীর্ষ পর্যায়ের দেশ। বাংলাদেশ তাদের অবস্থান কেড়ে নেওয়ায় হারানো অবস্থা ফিরে পেতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ উদ্দেশ্যে পোশাক কারখানার যন্ত্রপাতি স্থাপনে ২০ শতাংশ ভর্তুকি ও কর সুবিধার বিশাল প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ৫ হাজার কোটি টাকার এই বিশেষ সুবিধা ভারতীয় পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। বর্তমানে চীনের পর পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের স্থান। এক সময় এ স্থানটিতে ছিল ভারতের স্থান। এখন তাদের অবস্থান ভিয়েতনামেরও পেছনে। ভারতীয় পোশাক রপ্তানিকারকরা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে সক্ষমতা ফিরে পেলে তা বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত বলে বিবেচিত হবে। ২০২১ সাল নাগাদ ৫০ হাজার বিলিয়ন কোটি পোশাক রপ্তানির টার্গেট পূরণ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ও পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে পোশাক রপ্তানিতে দ্রুত চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ নিতে হবে। নতুন বাজার অনুসন্ধানেও হতে হবে তত্পর।  ল্যাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ এবং আফ্রিকায় তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণেও উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর