শিরোনাম
বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

জাকাত ইসলামের অন্যতম ভিত্তি

মাওলানা আবদুর রশীদ

ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এগুলো হলো— ১। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার রসুল— এই সাক্ষ্য প্রদান করা ২। নামাজ কায়েম করা ৩। জাকাত আদায় করা ৪। হজ করা ৫। রমজানের রোজা রাখা। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে স্পষ্টভাবে বলা যায়, জাকাত আল্লাহ কর্তৃক সামর্থ্যবানদের ওপর ফরজ একটি বিধান এবং ইসলামের একটি অন্যতম স্তম্ভ। ইসলামী ইতিহাস মতে, আল্লাহপাকের এই বিধান অর্থাৎ জাকাত আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় হিজরি সনে ফরজ হয়। জাকাত শব্দের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এমন নেসাব পরিমাণ সম্পদের একটি অংশ কোনো গরিব অভাবীকে একমাত্র আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে অর্পণ করাই হলো জাকাত। সম্পদের ওই অংশকে তার হক হিসেবে অর্পণ করতে হবে। এর অন্যথা হলে চলবে না। অর্থাৎ যিনি জাকাত দিবেন তিনি এটিকে দয়া দাক্ষিণ্য ভাবতে পারবেন না। তাকে ভাবতে হবে এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া গরিবের অধিকার।

জাকাতদাতা গরিব ব্যক্তিকে জাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো জাগতিক স্বার্থের কথা ভাবলেও তা বৈধ বলে বিবেচিত হবে না। এ ধরনের যে কোনো প্রয়াসে জাকাত আদায় হবে না। জাকাত দানকারী গরিব ব্যক্তিকে জাকাত দান করে তার ওপর কোনো অনুগ্রহ করছেন এমন ভাবলেও তা অন্যায় বলে বিবেচিত হবে। কারণ সম্পদের ওই নির্দিষ্ট অংশ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে দোয়া গরিবের হক বা অধিকার। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে এবং তাদের (ধনীদের) সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে অভাবগ্রস্ত এবং বঞ্চিতদের অধিকার। (সুরা যারিয়াত ১৯নং আয়াত)

যারা জাকাত দানে অস্বীকৃতি জানাবে বা কার্পণ্য করবে তাদের ওপর আল্লাহর বিধান অত্যন্ত কঠোর। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন— যে ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত আদায় করবে না, কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা তার গলায় সর্প ঝুলিয়ে দিবেন। (তিরমিজি শরিফ)

ইসলাম ধনীদের সম্পত্তির বর্ধিত অংশকে গরিবের পাওনা বা হক হিসেবে দেখে। যে কারণে জাকাত আদায়কালে আদায়কারীর উদ্দেশ্য হতে হবে একমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি। এর অন্যথা হলে তা আমল হিসেবে বিবেচিত হবে না।  রসুল (সা.) এ নিয়ে তার অনুসারীদের অর্থাৎ মুমিনদের সতর্ক করে বলেছেন— নিশ্চয় নেক আমলের মধ্যে সামান্যতম লৌকিকতা শিরক।      

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর