বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোরআনের আলোকে জাকাত

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

জাকাত কাকে বলে। জাকাত পেতে পারে কে। জাকাত দেওয়ার নিয়ম কী। কোরআনের আলোকে এসবই আলোচিত হলো আজকের লেখায়।

ইসলামের অন্যতম বিধান জাকাত। পবিত্র কোরআন এবং রসুল (সা.)-এর হাদিসে জাকাতের জোর গুরুত্ব রয়েছে। জাকাত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট খাত রয়েছে। জাকাতের খাত বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এসব সদকা তো আসলে ফকির ও মিসকিনদের জন্য, ওই লোকদের জন্য যারা সদকার কাজে নিযুক্ত, আর তাদের জন্য যাদের মন জয় করা প্রয়োজন, তা ছাড়া এসব সদকা দাস মুক্ত করা, ঋণগ্রস্তদের সাহায্য করা, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের খেদমতে ব্যয় করার জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং তিনি পরম জ্ঞান ও বুদ্ধির অধিকারী। (সুরা তাওবাহ, ৯ : ৬০।) জাকাতের খাত সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেকেই জাকাত দেওয়ার সময় ফকির-মিসকিন ছাড়া আর কাউকে বিবেচনা করেন না। আজকের লেখায় জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরছি।

ফকির  ও মিসকিন : ইমাম আবু হানিফার (র.) মতে, যার কিছু সম্পদ আছে তবে তা নিসাব পরিমাণ নয়, সে ফকির। আর যার কোনো সম্পদই নেই সে মিসকিন। ইমাম শাফেয়ি, মালেক ও আহমাদ ইবনে হাম্বলের মতে, যার সম্পদ আছে কিন্তু জরুরি প্রয়োজন পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়, এমন ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও সে ফকিরের অন্তর্ভুক্ত হবে। উদাহরণস্বরূপ, এক ব্যক্তি কিংবা পরিবারের দৈনিক ন্যূনতম প্রয়োজন ১০ টাকা কিন্তু সে পাচ্ছে ৩ বা ৪ টাকা। তাহলে সে এবং ওই পরিবার নিঃসন্দেহে ফকির হিসেবে গণ্য হবেন। ইমাম তাবারির মতে, অভাবগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি অন্যের কাছে হাত পাতে না বা সামাজিকতার কারণে চাইতে পারে না সেই ফকির। আর যে অন্যের দুয়ারে চেয়ে বেড়ায় সেই মিসকিন।

জাকাতের কাজে নিয়োজিত : জাকাত আদায়ে নিয়োজিত কর্মচারী বলতে বুঝায়- জাকাত আদায়, সংরক্ষণ ও ব্যয়-বণ্টন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের জন্য গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকরা। এদের বেতন জাকাত ফান্ড থেকে দেওয়া হবে। আর এ দায়িত্ব সরকারপ্রধানেরই।

যাদের মন ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করা প্রয়োজন।  আর্থিক সহযোগিতা এবং বদান্যতার গুণে মুগ্ধ হয়ে ইসলামের প্রতি আগ্রহী হতে পারে এমন ধারণা করলে তাদের পেছনে জাকাতের মাল খরচ করা যাবে।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

www.selimazadi.com

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর